বাংলা হান্ট ডেস্ক : বর্তমানে ভারতে (India) পরিবহন কাঠামোর উন্নয়ন চলছে দ্রুত গতিতে। বিশেষ করে হাইওয়ে এবং এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণের কাজ চলছে বিদ্যুৎ গতিতে। কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করি বহুবার নিজের ভাষণে জানিয়েছেন যে, আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ ভারতে আমেরিকার থেকেও উন্নত রাস্তা নির্মাণ করে দেখাবেন তিনি। আর সেই স্বপ্নকে সাকার করতে বিস্তর কাজ চলছে দেশের অন্দরে। ইতিমধ্যেই বহু রেকর্ড নির্মাণ হয়ে গিয়েছে আর এবার নয়া মুম্বাই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে আরো এক শিরোনাম কেড়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কিছুসময় আগেই বিশ্বের দ্রুততম হাইওয়ে নির্মাণকারী দেশে পরিণত হয়েছে ভারত। হাইওয়ের পরিমাণের ক্ষেত্রেও অর্থাৎ মোট কত কিমি হাইওয়ে রয়েছে, সেই পরিসংখ্যানে চিনের (China) থেকে এগিয়ে যাওয়ার পর আরো একটি রেকর্ড ছিনিয়ে নিতে চলেছি আমরা। ভারতে এমন দুটি টানেল (Tunnel) তৈরি হচ্ছে যা উন্নত বিশ্বের কাছেও নেই। এতদিন সবচেয়ে প্রশস্ত টানেলের রেকর্ড ছিল চিনের কাছে, কিন্তু মুম্বাই-পুনে এক্সপ্রেসওয়েতে যে টানেল নির্মাণ হচ্ছে তার দৈর্ঘ্য হতে চলেছে চিনের টানেলের চেয়েও অনেকগুণ বেশি।
নির্মাণকাজ শেষ হলেই সবচেয়ে প্রশস্ত টানেলের রেকর্ডও ভারতের কাছেই আসবে। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ওপর ঘুরপথে এই টানেল তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে সাধারণ রাস্তায় তৈরি টানেলের প্রস্থ কমে যায়, সেখানে ভারতের প্রকৌশলীরা বিস্ময়কর কাজ করে এই অসাধ্য সাধন করেছেন। আর সেই কারণেই ভারত চিনকে হারিয়ে খেতাব নিজেদের মাথায় তুলতে চলেছে।
আপনাদের জানিয়ে দিই যে, বর্তমানে চিনেই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে চওড়া টানেল। সেটির ১৩.৭ মিটার চওড়া। মোট ১৬.৬২ কিমি দীর্ঘ টানেলটি ইয়াংজি নদীর তলদেশ দিয়ে গিয়েছে। চিনের সাংহাই শহরের সাথে চ্যাংজিং দ্বীপের সংযোগ স্থাপনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে এই টানেল। কিন্তু শীঘ্রই এই শিরোপা আসতে চলেছে ভারতের কাছে। উল্লেখ্য, মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়েতে দুটি টানেল তৈরি করা হচ্ছে। যার দৈর্ঘ্য ১.৭৫ কিমি এবং অন্যটি ৮.৯২ কিমি।
মুম্বই এবং পুনের সংযোগ স্থাপন করবে এই টানেল দুটি। উভয় টানেলের প্রস্থ ২৩.৭৫ মিটার। যার ফলে এই দুটি টানেলই বিশ্বের চওড়া টানেলের শিরোপা পেতে চলেছে। ৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে টানেলটি লোনাভালা হ্রদের জলস্তর থেকে ৫০০-৬০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। ইতিমধ্যেই ৭০% কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং আগামী ২০২৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই সেটির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেই জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মোট ৬৬৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে এই টনেল দুটির। বিশ্বের সবচেয়ে চওড়া টানেল উদ্বোধনের পর মুম্বই এবং পুনে শহরের মধ্যে যাতায়াতের সময় আরো ৩০ মিনিট কমতে চলেছে। এছাড়া খোপোলি এবং সিংহগড় ইনস্টিটিউটের মধ্যে দূরত্বও ১৯ কিমি থেকে কমে নেমে আসবে ১৩.৩ কিমিতে। সুড়ঙ্গটির সুরক্ষা ব্যবস্থাতেও রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ভূমিকম্প বিরোধী থেকে শুরু করে আগুন নিয়ন্ত্রন, সমস্ত কিছুই উপস্থিত থাকবে সেখানে।