ভারতীয় সীমান্তের কাছে হুথিদের স্ট্রাইক! আরব সাগরে ইজরায়েলি জাহাজে ড্রোন হামলা, সতর্ক নৌসেনা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে যে, ভারত মহাসাগরে (Indian Ocean) আরব সাগরের ( Arabian Sea) কাছাকাছি ইজরায়েলের (Israel) একটি বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন হামলা (Drone Attack) চালানো হয়েছে। ওই ড্রোন হামলায় ভারত মহাসাগরে থাকা বাণিজ্যিক জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এই প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যাম্ব্রে জানিয়েছে, যে ভারত মহাসাগরে ড্রোন দ্বারা একটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে। লাইবেরিয়ার পতাকাযুক্ত ওই রাসায়নিক/পণ্য ট্যাঙ্কারটি ইজরায়েলের। সেটি সৌদি আরব থেকে ভারতের ম্যাঙ্গালোরের দিকে আসছিল বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, সেটিতে হামলার পরে কিছু কাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতিরও খবর পাওয়া গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউকেএমটিও ওই জাহাজে একটি আনক্রুড এরিয়াল সিস্টেম (ইউএএস) দ্বারা আক্রমণের একটি রিপোর্ট পেয়েছে। যার ফলে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লেগে যায়। এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ভেরাভালের ২০০ এনএম দক্ষিণ-পশ্চিমে। আরও জানানো হয় যে, আগুন নিভে গেছে এবং কোনো হতাহতের ঘটনা নেই। আধিকারিকরা বিষয়টির তদন্ত করছেন।

ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে বেড়েছে হামলার আশঙ্কা: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর লোহিত সাগরে ইরান সমর্থিত হুথিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বেড়েছে। হুথিরা জানিয়েছে যে, তারা হামাসকে সমর্থন করে। তাই তারা ইজরায়েলের সাথে যুক্ত বাণিজ্যিক শিপিংকে তাদের “টার্গেট’ করেছে। রিপোর্ট অনুসারে, এর ফলে জাহাজগুলিকে তাদের গতি পরিবর্তন করতে এবং আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের আশেপাশের দীর্ঘ পথ গ্রহণ করতে বাধ্য করেছে।

এদিকে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিকল্পনায় ইরান “গভীরভাবে জড়িত” ছিল। অন্যদিকে, ইরানের রিভলিউশনরি গার্ডের একজন কমান্ডার জানিয়েছেন যে, আমেরিকা এবং তার মিত্ররা গাজায় “অপরাধ” চালিয়ে গেলে ভূমধ্যসাগর বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন: ফের তৈরি আশঙ্কা! হু হু করে বাড়ছে করোনার JN.1 ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা, ৩০ দিনেই রেকর্ড সংক্রমণ

ভূমধ্যসাগর ও জিব্রাল্টারের নৌপথ বন্ধ করার হুমকি: রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রাজা নাকদি জানিয়েছেন, “তারা শীঘ্রই ভূমধ্যসাগর, জিব্রাল্টার এবং অন্যান্য জলপথ বন্ধ করার জন্য অপেক্ষা করবে।”

আরও পড়ুন: এই রাজ্যে তৈরি হচ্ছে ভারতের প্রথম হাই-স্পিড রেলওয়ে ট্র্যাক, কবে হবে প্রস্তুত? সামনে এল দিনক্ষণ

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের বেশিরভাগ অংশই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অনুসারে জানা গিয়েছে, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, শস্য এবং খেলনা থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স সবকিছুই সাধারণত আফ্রিকা এবং আরব উপদ্বীপকে পৃথক করে সুয়েজ খালের মাধ্যমে যাতায়াত করে। যেখানে বিশ্ব বাণিজ্যের ১২ শতাংশ পাশ হয়।

এদিকে, ইতিমধ্যেই বিশ্বের কিছু বড় কন্টেইনার শিপিং কোম্পানি এবং তেলের বৃহৎ সংস্থা বিপি লোহিত সাগর অতিক্রম করে দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রায় জাহাজ পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায়, আমেরিকা এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশ জাহাজ রক্ষার জন্য “অপারেশন প্রোস্পারিটি গার্জিয়ান” নামে একটি নতুন বাহিনী তৈরি করেছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর