বাংলা হান্ট ডেস্ক : দুদিন তিনি অর্নিদিষ্টকালের জন্য নির্বাসিত হয়েছেন লোকসভা থেকে। আর এদিন সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকেই (Narendra Modi) নিশানা করলেন প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। এদিন মণিপুরে অশান্তি (Manipur Violence) নিয়ে নিজের সরকারের ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে ১৯৬৬’র মিজোরাম প্রসঙ্গ মনে করান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দাবি করেন, ১৯৬৬-তে মিজোরামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমন করতে কীভাবে নিজের দেশেই ‘এয়ার স্ট্রাইক’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi)। মোদি জানতে চান করেছিলেন, কংগ্রেস কি চাইছে সেরকমভাবে নিজের দেশেই সেনা হামলা চালাক?
নমোর প্রশ্ন : মোদির (Narendra Modi) সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এবার কার্যত বোমা ফাটালেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলে দিলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে, বিদেশি শক্তিকে দেশের মাটি থেকে উৎখাত করতে যদি নিজের দেশে বোমা মারার প্রয়োজন পড়ে তাহলে তাই মারা উচিত সরকারের। অধীর জানিয়ে দেন, সরকার যদি জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের দেশে বোমাও মারে তাতেও বিরোধিতা করবে না কংগ্রেস।
কী দাবি কংগ্রেস সাংসদের? অধীরের অভিযোগ সংসদে মিজোরামে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে যে অভিযোগ মোদি করেছেন, সেটা আংশিক সত্য এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশে করা। আসলে, ষাটের দশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম মিজো রাষ্ট্রের দাবিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয় মিজোরামে।
চিন এবং পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদতে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (MNF) নামের স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। তাদের অনেকবার আলোচনার টেবিলে ডাকা হলেও সাড়া মেলেনি। শেষে বাধ্য হয়ে আইজলে এমএনএফ-এর ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। তারপর বাধ্য হয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে এমএনএফ। আলাদা রাষ্ট্রের দাবি ছেড়ে ভারতীয় গণতন্ত্রের অংশ হিসাবে ভোট রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর থেকে আজ অবধি শান্ত মিজোরাম।
অধীর বলছেন, প্রয়োজন পড়লে এই ধরনের অভিযান ভারত সরকারও করতে পারে। লাদাখের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, লাদাখে ভারতীয় ভুখণ্ড দখল করে বসে আছে চিন। অরুণাচলে ভারতীয় ভুখণ্ডে গ্রাম বানিয়ে বসে আছে। যদি ভারত সরকার লাদাখে বিদেশি শক্তিকে সরাতে বোমা মারে মারুক। অরুণাচলে চিনের তৈরি গ্রামে বোমা মারুক। কংগ্রেস (Congress) সরকারের পাশেই থাকবে। অধীরের দাবির প্রেক্ষিতে একনও পর্যন্ত মোদি সরকারের তরফ থেকে কোনও উত্তর আসেনি।