বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘কাকুর’ কণ্ঠস্বর জোগাড় করতে এখনও ব্যর্থ ইডি (Enforcement Directorates)। নিয়োগ দুর্নীতির জট খুলতে ইডির চাই সুজয়কৃষ্ণর (Sujaykrishna Bhadra) কণ্ঠস্বর। কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য ফের একবার SSKM হাসপাতালকে চিঠি দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
প্রসঙ্গত গত মাসে বিশেষ PMLA আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, প্রয়োজনে হাসপাতালে গিয়ে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে ইডি কে। তবে অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ওপর যাতে কোনও মানসিক চাপ না সৃষ্টি হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই ইডি আধিকারিকদের এই কাজ করতে হবে। আদালতের সবুজ সংকেতের পর এবার হাসপাতালে গিয়েই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে তৎপর হয় ইডি। যদিও এখনও অধরা সেই নমুনা।
গ্রেফতারির ৫ মাস কেটে গেলেও ‘কালীঘাটের কাকুর’ কণ্ঠস্বর জোগাড় করতে এখনও অসফল ইডি। আদালতের নির্দেশের পর গত সপ্তাহে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ সহ একেবারে হাসপাতালে পৌঁছে যান ইডির আধিকারিকরা। তবে সেখানে গিয়ে ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের অনুমতি মেলেনি।
আরও পড়ুন: ‘এ রাজ্যে বিরোধী দল করতে গেলে..’, চারটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণের পর যা বললেন সৌমিত্র খাঁ
সূত্রের খবর, সেই সময় সুজয়কৃষ্ণের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা ইডিকে জানান, রোগীর মানসিক অবস্থা ভালো নেই। তাই এই সময় কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গেলে তার উপর চাপ পড়তে পারে। সেদিন ফিরে এলেও গত শনিবার ফের SSKM হাসপাতালকে চিঠি পাঠিয়েছে ইডি। ঠিক কবে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে এখনও পর্যন্ত সেই চিঠির কোনও জবাব হাসপাতাল তরফে মেলেনি বলেই খবর। এরপর এই নিয়ে ইদি ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। ইডির দাবি, বিষ্ণুপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে।
ইডির দাবি সুজয়কৃষ্ণ রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর যে সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। ধন্দই থেকে গিয়েছে। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। অনুমতিও দেয় আদালত।
যদিও এরপরই হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। এদিকে প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। তড়িঘড়ি তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তার বাইপাস সার্জারি করানো হয়।
বাইপাস সার্জারির পর ছাড়া পেলে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। তাই পরিস্থিতি বুঝে এবার হাসপাতালে গিয়েই সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইডি।