বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি মামলা (Ration Scam) নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আগেই জানা গিয়েছিল, মঙ্গলবার এই মামলায় চার্জশিট পেশ করতে চলেছে ইডি। আজ কলকাতার নগর দায়রা আদালতে দ্বিতীয় চার্জশিট জমা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজ পেশ করা চার্জশিটে নাম রয়েছে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর নাম। উল্লেখ আছে তাঁর কোম্পানির কথাও।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) ওরফে বালুর সঙ্গে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ‘ব্যবসায়িক’ সম্পর্কের কথাও চার্জশিটে উল্লেখ আছে বলে খবর। ইডির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিপুল টাকা বিদেশি মুদ্রায় রূপান্তরিত করতেন শঙ্কর আঢ্য (Shankar Adhya)। সেই কাজ করে ০.৫% কমিশনও পেয়েছেন তিনি। এভাবেই পকেটে পুড়েছেন কোটি কোটি টাকা।
গত ৫ জানুয়ারি বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। রেশন দুর্নীতি মামলায় তাঁকে জেরা করা হয়। জেরায় অসঙ্গতি পাওয়ায় সেদিন রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ইডির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে শঙ্করের যোগাযোগ ছিল। হাসপাতাল থেকেও সেই যোগাযোগ বজায় রেখেছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন মেয়েকে যে চিঠি লিখেছিলেন বালু, সেখানেও শঙ্করের উল্লেখ ছিল বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
শঙ্করের গ্রেফতারির পর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’মাস। এবার এই মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট (Charge Sheet) পেশ করলোও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ৮৩ পাতার এই চার্জশিটে শঙ্কর এবং তাঁর চার কোম্পানির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের টাকা বিদেশি মুদ্রায় রূপান্তরিত করতে সাহায্য করেছেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর। এই কাজের জন্য তাঁকে কমিশনও দেওয়া হয়েছে। ইডির দাবি, ২০১১-২০২২ সালের মধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে এভাবেই বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এর মধ্যে ০.৫% টাকা কমিশন হিসেবে গিয়েছে শঙ্করের ঝুলিতে।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতির (Ration Distribution Case) টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ করেছিল ইডি। শঙ্করের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলেও দাবি করা হয়। ২০,০০০ কোটি টাকা শঙ্কর বিদেশে লেনদেন করেছেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে কমপক্ষে ৯,০০০ থেকে ১০,০০০ কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয়র। হাসপাতাল থেকেও তিনি শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছিলেন বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সেই অভিযোগ স্বীকার করেননি।
আরও পড়ুনঃ অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়তে ভয় পাই না! লক্ষ লক্ষ ভোটে হারাব, গর্জে উঠলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বর মাসে রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল ইডি। সেই চার্জশিটে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট দাবি করেছিল, ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে। তবে তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সেই অঙ্কটা বাড়তে পারে বলেও দাবি করা হয়। আজ এই মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করলো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবার জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে শঙ্করের যোগাযোগ, টাকা পাচার এবং কমিশনের কথা দাবি করা হয়েছে।