বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে একদিকে এসআইআর প্রক্রিয়া চলছে। তার মধ্যেই ভোট পরিচালনা সংক্রান্ত একটি নতুন পরিকল্পনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। ভোটদাতাদের উৎসাহ বাড়াতে বহুতল আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির ভাবনা নিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ঘিরে আপত্তি, রাজনৈতিক বিতর্ক ও বাসিন্দাদের অনীহার জেরে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল কমিশন। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বহুতল আবাসনগুলিতে আলাদা করে কোনও ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে না।
কেন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল কমিশন (Election Commission)?
কমিশন (Election Commission) সূত্রে জানা গেছে, এই পরিকল্পনা নিয়ে জেলাশাসক তথা ডিইও-দের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। সোমবারই ছিল সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতে এসেছে মাত্র দু’টি রিপোর্ট। সেই রিপোর্টগুলিতে এবং অন্যান্য সূত্র থেকে কমিশন বুঝেছে, রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আবাসনের বাসিন্দারাও বহুতল আবাসনে আলাদা ভোটকেন্দ্র চাইছেন না। সেই কারণেই এই পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী ভাবনা ছিল কমিশনের?
নির্বাচন কমিশনের ভাবনায় ছিল, যে সমস্ত বহুতল আবাসনে ৩০০ জনের বেশি ভোটার রয়েছেন, সেখানেই আলাদা ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হবে। কিন্তু এই প্রস্তাবের শুরু থেকেই বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি কলকাতার বিভিন্ন আবাসন কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে বৈঠকও করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এছাড়াও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে সরাসরি চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভোটকেন্দ্র সাধারণত সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গাতেই হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কীভাবে আবাসনের মতো বেসরকারি জায়গায় বুথ তৈরি করা যায়, এই প্রশ্নও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে কেন এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তা ব্যাখ্যাও দিয়েছিল কমিশন (Election Commission)। কমিশনের তরফে জানানো হয়, কলকাতা ও সংলগ্ন শহরতলিতে ভোটদানের হার তুলনামূলকভাবে কম। সেই ভোটের হার বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, দিল্লিতে হাউসিং কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্র চালু করার ফলে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোটদানের হার প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখেই কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ রাতে হঠাৎ করেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে! কী হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর?
কিন্তু রাজ্যে রাজনৈতিক দলগুলির আপত্তি, বাসিন্দাদের অনীহা এবং পর্যাপ্ত রিপোর্ট না আসার কারণে শেষ পর্যন্ত বহুতল আবাসনে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করার সিদ্ধান্তই নিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)।












