বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত রবিবার বিজেপি নেতা তথা ভারতের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর (Rajeev Chandrasekhar) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (EVM) বাদ দেওয়ার জন্য ইলন মাস্কের (Elon Musk) আহ্বানকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত ইলন মাস্ক সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন। যেখানে তিনি জানিয়েছিলেন যে, EVM মেশিন যে কেউ হ্যাক করে ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, তিনি এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করার আর্জি জানানোর পাশাপাশি আমেরিকার নির্বাচন থেকে EVM সরিয়ে ফেলার দাবি জানান।
মূলত, মাস্ক EVM-এর নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে মানুষ বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা এগুলির হ্যাক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির কারণে সেগুলিকে বাদ দেওয়া উচিত। উল্লেখ্য যে, পুয়ের্তো রিকোর সাম্প্রতিক নির্বাচনে আমেরিকার রাজনীতিবিদ রবার্ট. এফ. কেনেডির EVM-এর বিষয়ে সমস্যার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাস্ক এক্স মাধ্যমে জানিয়েছেন, “আমাদের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বাদ দেওয়া উচিত। সামান্য হলেও মানুষ বা AI দ্বারা এটির হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি।”
এদিকে, ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রশেখর মাস্কের দাবির সমালোচনা করেছেন এবং জানিয়েছেন যে মাস্কের এই বিবৃতি এটাই চিহ্নিত করার চেষ্টা করে যে, কেউই নিরাপদ ডিজিটাল হার্ডওয়ার তৈরি করতে পারেনা। যেটা সম্পূর্ণ ভুল। বিজেপি নেতা জানান, মাস্কের এহেন উদ্বেগ সেইসব দেশে প্রযোজ্য হতে পারে যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ সহ স্ট্যান্ডার্ড কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভোটিং মেশিন তৈরি করা হয়। ভারতে এটি প্রযোজ্য নয়।
We should eliminate electronic voting machines. The risk of being hacked by humans or AI, while small, is still too high. https://t.co/PHzJsoXpLh
— Elon Musk (@elonmusk) June 15, 2024
তিনি বলেন, “ভারতীয় EVM গুলি কাস্টম ডিজাইন, সুরক্ষিত এবং যে কোনও নেটওয়ার্ক বা মিডিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। এখানে কোনও সংযোগ নেই, কোনও ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ইন্টারনেট নেই। অর্থাৎ, এটিতে প্রবেশ করার কোনও উপায় নেই। ফ্যাক্টরি প্রোগ্রামড কন্ট্রোলারগুলিকে রিপ্রোগ্রাম করা যাবে না।” এদিকে, চন্দ্রশেখর কিভাবে নিরাপদ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলি সঠিকভাবে ডিজাইন এবং তৈরি করা যায় সেই সম্পর্কে একটি টিউটোরিয়াল দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হয়ে গেল কনফার্ম! গম্ভীরই হচ্ছেন ভারতীয় দলের হেড কোচ, এইদিন ঘোষণা করবে BCCI
তিনি মাস্কের উদ্দেশ্যে জানান, “ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলি ভারতের মতোই প্রযুক্তিতে তৈরি করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে টিউটোরিয়াল দেওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা খুশি হব।” এদিকে মাস্ক চন্দ্রশেখরের এহেন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, “যে কোনোও কিছু হ্যাক করা যেতে পারে”। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, কেনেডি যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তিনি “শত শত ভোটের অনিয়ম” সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি সামনে এনেছেন এবং এই জাতীয় সমস্যাগুলি সনাক্ত এবং সংশোধন করার জন্য একটি পেপার ট্রেইলের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: T20 বিশ্বকাপে এবার আসল লড়াই! সুপার-8 রাউন্ডের সময়সূচি ঘোষণা ICC-র, কবে-কখন-কোথায় হবে ম্যাচ?
তাঁর মতে, “সৌভাগ্যক্রমে, একটি পেপার ট্রেল ছিল, তাই সমস্যাটি চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং ভোটের সংখ্যা সংশোধন করা হয়। যে বিচারব্যবস্থায় পেপার ট্রেল নেই সেখানে কী হয়? “মার্কিন নাগরিকদের জানা দরকার যে তাদের প্রতিটি ভোট গণনা করা হয়েছে এবং তাদের নির্বাচন হ্যাক করা যাবে না। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক হস্তক্ষেপ এড়াতে আমাদের পেপার ব্যালটে ফিরে আসতে হবে। আমার প্রশাসনের পেপার ব্যালট লাগবে এবং আমরা সৎ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেব।”