বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ থেকে শুরু করে রেশন, একাধিক দুর্নীতি মামলা নিয়ে উত্তাল রাজ্য। এর মাঝেই এবার শিরোনামে উঠে এল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্নীতি! রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে বেআইনিভাবে টাকা তুলছিলেন এক যুবক। এবার তাঁকে গ্রেফতার করল ইডি (Enforcement Directorate)।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্নীতির দায়ে ‘প্রভাবশালী’ যুবককে গ্রেফতার ED-র (Enforcement Directorate)
কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রেফতার হওয়া যুবকের নাম বুধাদিত্য চট্টোপাধ্যায় (৩৯)। কসবার বিবি চ্যাটার্জি স্ট্রিটের একটি আবাসনে থাকেন তিনি। এর আগে কলকাতা পুলিশের কাছে ওই যুবকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। রাজ্যের নানান প্রান্ত থেকে তো বটেই, ভিন রাজ্য বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থাকেও বুধাদিত্য প্রতারণার শিকার বানিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এবার তাঁকেই দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করল ইডি (Enforcement Directorate)।
জানা যাচ্ছে, একাধিক ওষুধ ও স্বাস্থ্যপরীক্ষার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাকে ‘শিকার’ বানিয়েছেন ওই যুবক। কারোর থেকে ২৫,০০০ টাকা নিয়েছেন তিনি, কারোর থেকে আবার ২৫ লক্ষ নিয়েছেন। অডিটরশিপের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরে কনসাল্টিং অডিটর বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সহ নানান বাহানায় বহু লোকের থেকে টাকা তুলেছিলেন বুধাদিত্য নামের ওই যুবক। বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে চলছিল তাঁর এই ‘কর্মকাণ্ড’!
আরও পড়ুনঃ CBI-র অপব্যবহার করছে কেন্দ্র! রাজ্যের অভিযোগকে মান্যতা সুপ্রিম কোর্টের, কী বলল আদালত?
স্বাস্থ্য দফতরের টেন্ডারের কাগজ জালিয়াতি করে শহর কলকাতার (Kolkata) একটি সংস্থার কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এদিকে গড়িয়ার একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার সরঞ্জাম সরবরাহ সংস্থার থেকে আবার ৮৫ লক্ষ টাকা নেন বলে খবর। বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা থেকেও টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে কসবা নিবাসী ওই যুবকের বিরুদ্ধে প্রথম এফআইআর দায়ের করা হয়। এরপর ২০২৩ সালে এই মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় ED-র (Enforcement Directorate) হাতে।
তদন্তে নামার পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা জানতে পারেন, বুধাদিত্য নিজেকে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে তুলে ধরতেন। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বলে নিজের পরিচিতি দিতেন তিনি। সেই সঙ্গেই রাজ্য সরকারের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং স্বাস্থ্য দফতরে চেনাজানা রয়েছে বলেও দাবি করতেন। এভাবেই ২০১৯ সাল থেকে এই প্রতারণার চক্র চালাচ্ছিলেন ওই যুবক। তবে শেষমেষ ED-র হাতে ধরা পড়ে গেলেন।
জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার ওই মামলায় জেরার জন্য বুধাদিত্যকে তলব করেছিল ED। এরপর বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জানা যাচ্ছে, আজই এই যুবককে আদালতে তোলা হতে পারে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোটি টাকার দুর্নীতির এই খবর সামনে আসতেই রাজ্য জুড়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।