বাংলা হান্ট ডেস্ক : বছর শেষে ফের একবার তৎপর হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate)। নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) মামলার তল খুঁজতে গিয়ে একটার পর একটা জায়গায় হানা দিয়েছে সংস্থাটি। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য রোজ সামনে আনছেন তদন্তকারীরা। পার্থ, সুজয়কৃষ্ণের মত হেভিওয়েট নেতাদের গ্রেফতারির পর ইডির ধারণা, দুর্নীতির বিপুল অঙ্কের কালো টাকা ছড়িয়ে রয়েছে বাজারের কোনায় কোনায়। নামে-বেনামে বিনিয়োগ করা হয়েছে এই কালো টাকা।
আর এবার সেই টাকার উদ্ধার করতেই উঠেপড়ে লেগেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। যে কারণে বৃহস্পতিবার একযোগে ১০ টি জায়গায় হানা দেয় তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তালিকায় রয়েছে ক্যানিং স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, ডালহৌসি, মানিকতলা , ভবানীপুর, সল্টলেকের বেঙ্গল কেমিক্যালসের নাম। নিয়োগ দুর্নীতিতে হওয়া আর্থিক নয়ছয়ের তল খুঁজতেই শুরু হয়েছে ইডির ম্যারাথন হানা।
এইদিন শহরের একটি নামি রিয়েল এস্টেট সংস্থা মার্লিন গ্রুপের (Merlin Group) চেয়ারম্যানের বাড়িতেও পৌঁছে যায় ইডি আধিকারিকদের দল। সেই সাথে রাজ্যের এক CA-র অফিস এবং বাড়িতেও চলছে খানা তল্লাশি। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ধারণা, নিয়োগ দুর্নীতিতে হওয়া এই বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিয়োগ হয়েছে এইসব নির্মান শিল্পে। তবে এই বিনিয়োগ ঠিক কীভাবে হয়েছিল এবং এর পেছনে কোন কোন কোম্পানি জড়িয়ে রয়েছে তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। আর তা জানার জন্যই বছর শেষে তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নেমেছে ইডি।
আরও পড়ুন : অরূপের সামনেই হাতাহাতিতে জড়ালেন মন্ত্রী মনোজ! হাওড়া কার্নিভাল ঘিরে চুলোচুলি তৃণমূলের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই ডেডলাইনের আগেই তদন্ত শেষ করতেই শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। সেই সূত্রেই উঠে আসছে মার্লিন গ্রুপের নাম। ইডির গোয়েন্দাদের ধারণা, কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Sujay Krishna Bhadra) টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এই সংস্থায়। সেখান থেকেই উঠে এসেছে সংস্থার চেয়ারম্যান সুশীল মোহতার (Sushil Mohta) যোগসূত্র। পূর্বেও একাধিকবার সমন পাঠানো হয়েছিল সুশীল মোহতার বাড়িতে। আর এবার তো খোদ ইডি-ই পৌঁছে গেল সেখানে।
আরও পড়ুন : ‘গৃহবধূরা বেকার নন’, সংসারের কাজেরও আর্থিক মূল্য রয়েছে, বড় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট
অভিযোগ, ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এই সংস্থাটির। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কোম্পানি এসডি কন্সালটেন্সির দফতরে যাতায়াতও ছিল মার্লিন গ্রুপের কর্মকর্তারদের। এমনকি সংস্থার চেয়ারম্যান খোদ সুশীল মোহতাও (Sushil Mohta) আসতেন সেখানে। আর এবার তার বাড়িতেই শুরু হল খানাতল্লাশি। সূত্রের খবর, বাড়ির পাশাপাশি সুশীল মোহতার দফতরেও অভিযান চালাচ্ছে ইডির অফিসাররা। সমস্ত নথী এবং ডিজিটাল প্রমাণ ঘেঁটে নিয়োগ দুর্নীতির বাকি টাকার হদিশ খুঁজছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন : ৪০০-রও বেশি আসন পাবে বিজেপি, মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ নানা পাটেকার, করলেন ভবিষ্যদ্বাণী
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে মার্লিন গ্রুপের (Merlin Group) অফিস থেকে বেশ কিছু তথ্য-সহ একটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেই সাথে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা এসডি কন্সালটেন্সির সাথে মার্লিন গ্রুপের আর্থিক লেনদেনের নথিও মিলেছিল বলে খবর। তবে কি ‘কালীঘাটের কাকু’র বয়ানের উপর ভিত্তি করেই সুশীল মোহতার বাড়িতে পৌঁছেছে ইডি? দিনভর তল্লাশির পর কোন তথ্য উঠে এল ইডি-র হাতে? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।