বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: রঞ্জি ফাইনালে (Ranji Trophy), সৌরাষ্ট্রের কাছে ঘরের মাটিতে লজ্জাজনকভাবে হারের মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলা রঞ্জি দলকে (Bangla Ranji Team)। ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) বাংলাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তুলেছে সৌরাষ্ট্র। তিন বছর আগে যখন বাংলা শেষবার রঞ্জি ট্রফি ফাইনালে পৌঁছেছিল তখনো এই সৌরাষ্ট্রের কাছে প্রথম ইনিংসের ভিত্তিতে হেরে রঞ্জি জয় হাতছাড়া হয়েছিল। এবারও সৌরাষ্ট্র কাঁটা উপড়ে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে মনোজরা।
কিন্তু বাংলা দলের ক্রিকেট খেলা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর থেকেও বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে এখন অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্ধ। সিএবির (CAB) অন্দর মহল থেকে উঠে আসছে নানান সমস্যার কথা। প্রাক্তন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া (Avishek Dalmiya) এবং বর্তমান সিএবি সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের (Snehasish Ganguly) মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
গাঙ্গুলী এবং ডালমিয়া দুই পরিবারই ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রঞ্চি ফাইনালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্যে হওয়া ভুল বোঝাবুঝির থেকে তাদের মধ্যে এখন সম্পর্কের শীতলতা তৈরি হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের যুগ্ম সচিব দেবজিৎ সাইকিয়ার হাত থেকে ট্রফি প্রদান করা হবে ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ দিনের শুরুর দিকেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি সময়মতো সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি বিষয়টি জয় শাহকে জানালে তিনি সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু বোর্ড সচিব জানতে পারেন যে সৌরভ সময়মতো সেখানে উপস্থিত হতে পারবেন না। তাই তিনি নির্দেশ দেন প্রাক্তন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়াকে উনদকাটদের হাতে ট্রফি তুলে দিতে, যিনি বর্তমানে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলেরও সদস্য। কিন্তু বিসিসিআইয়ের অন্য এক ভাগের তরফ থেকে স্নেহাশীষ গাঙ্গুলীর কাছেও নির্দেশ চায় যাতে তিনি বিজয়ী রঞ্জি দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন। শেষপর্যন্ত অবশ্যই অভিষেক এই দায়িত্ব পালন করেন। স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়কে সন্তুষ্ট থাকতে হয় মনোজদের হাতে রানার্স হওয়ার ট্রফি তুলে দিয়ে।
সিএবি অফিসে প্রাক্তন সভাপতিদের জন্য একটি ঘর রাখা থাকে। ফাইনালে ওই ভুল বোঝাবুঝির পর সেই ঘর থেকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের অর্থাৎ অভিষেকের নামাঙ্কিত ফলকটি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। জানা গিয়েছে স্নেহাশীষের নির্দেশে সদস্য অনু দত্ত এই কাজটি করেছেন। এই ঘটনা জানতে পারার পর প্রবল ক্ষুব তখন অভিষেক এবং প্রতিজ্ঞা করেন যে আর কোনদিনও সিএবিতে পা রাখবেন না।
পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে যায় যে আসরে নামতে হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তার বেহালের বাড়িতে বৈঠকের পর অভিষেক কিছুটা শান্ত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে সিএবির প্রশাসন সম্পর্কে ঘৃণার মনোভাব তৈরি হয়েছে। দলের ভালো কিভাবে হয় সেই নিয়ে না ভেবে তারা এমন ছেলে মানুষই করছেন যা মেনে নেওয়া অত্যন্ত কঠিন বলে মনে করছেন বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।