বাংলাহান্ট ডেস্কঃ গত দুই মাস ধরে লকডাউনের মধ্যে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) জাতীয় হাইওয়ে-৭ এর করঞ্জি (Karanj) অঞ্চলের যাত্রীদের শুকনো খাবার দিয়ে সহায়তা করছেন বাবা কর্নেল সিং খাইরা (Baba Karnail Singh Khaira)। রাস্তা দিয়ে দিয়ে যাওয়া হাজার হাজার বাস, ট্রাক, টেম্পো এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রীদের সাহায্য করলেন তিনি। রাস্তার ধুলাবালির মধ্যে প্লাস্টিকের শীটযুক্ত রামশ্যাকল টিনের শেডে বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন।
বিনামূল্যে খাবার
প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাপথের মধ্যে শুধুমাত্র এই ধাবায় একদম বিনামূল্যে খারাব পাওয়া যায়। এই প্রত্যন্ত উপজাতি অঞ্চলে প্রায় ১৫০ কিমি থেকে ৩০০ কিমি রাস্তার মধ্যে কোন খাবারের দোকান নেই। সেই কারণে বেশিরভাগ মানুষজন এই ‘গুরু কা লাংগার’-এ থামেন এবং আহার গ্রহণ করেন।
লঙ্গরখানা খোলার নির্দেশ
গুরুদ্বার ভাগোদ সাহেব দূরে থাকার দরুণ ১৯৮৮ সালে নান্দেদ গুরুদ্বার সাহেবের বাবা নরিন্দর জী এই লঙ্গর খানা খোলার নির্দেশ দেন। সেই মতো গত ৩২ ধরে এই লঙ্গরখানা চলছে। গত ২৪ শে মার্চের লকডাউনের সময় থেকেই আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক, ভ্রমণকারী, ট্রাকার এবং গ্রামবাসী সহ কয়েক হাজার মানুষের ত্রাণ কর্তা হয়ে দাঁড়ায় এই লঙ্গরখানা।
মানুষের পাশাপাশি খাবার পেত অবলা প্রাণীরাও
ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলকেই খাবার দিতাম। প্রতিদিন ১১ জন রাঁধুনি এবং ১৭ সেবক মিলে এই কাজ করতে। এখানে রুটি বা বিস্কুট সহ চায়ের ব্যবস্থা রয়েছে, এবং সমস্ত খাবারে ডাল, আলু-ভাতে এবং আলু ভাজা সহ সাধারণ ভাতের ব্যবস্থা রয়েছে। এর পাশাপাশি স্নানেরও ব্যবস্থা রয়েছে। বিগত ১০ সপ্তাহে ১৫ লক্ষেরও বেশি মানুষকে এখানে খাওয়ানো হয়েছে এবং প্রায় ৫ লক্ষ পার্সেলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মানুষের পাশাপাশি আশপাশের প্রায় ২৫০ কুকুর, বিড়াল, গবাদি পশু এবং অন্যান্য প্রাণীকেও খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।
তিনি জানান, ‘উত্তরপ্রদেশে আমার জন্ম হলেও, মাত্র ১১ বছর বয়সে মানবজাতির সেবার কারণে ঘর ছেড়ে গোদাবরী নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণে সহায়তা করি। নিরক্ষর হলেও আমি ইংরাজী, হিন্দি, পাঞ্জাবী, আরবি, ডাচ, জার্মান এবং মারাঠি ভাষায় কথা বলতে পারি। আমি এই লঙ্গরখানাতেই থাকি এবং এখানেই রাত্রিযাপন করি’।