বাংলাহান্ট ডেস্ক: আফগানিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সীমান্ত উত্তেজনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংকটের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান (Pakistan) তার রেল পরিষেবা নিয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসী হামলার আভাস পেয়ে বালোচিস্তানে সব ধরনের ট্রেন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে। যাত্রী ও রেলকর্মীদের নিরাপত্তাই এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
বালোচিস্তানে সমস্ত ধরনের ট্রেন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করল পাকিস্তান (Pakistan):
এই পদক্ষেপের ফলে দেশটির একাধিক কৌশলগত রেল সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোয়েটা ও পেশোয়ারের মধ্যে চলাচলকারী জাফর এক্সপ্রেস, করাচি-গামী বোলান মেল এবং পেশোয়ার থেকে কোয়েটাগামী ট্রেনসহ একাধিক দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী শহর চামানের ট্রেন পরিষেবাও স্থগিত রাখায় হাজার হাজার যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সরাসরি অনুমতি ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হবে না।
আরও পড়ুন: বাংলায় বড় বিনিয়োগ রেলের! দেউলটি ব্রিজে ১৩০ কিমি গতিতে ছুটবে ট্রেন, কত টাকা বরাদ্দ?
এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে বালোচিস্তানের বোলান পাস এলাকায় ট্রেনগুলির ওপর সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া সশস্ত্র হামলার অভিযোগ। গত মাসেই কাছি জেলার বোলান পাসে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বড়সড় হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গত দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে কোয়েটা সিবি এলাকায় এই ট্রেনটির ওপর এটিই ৬ বার হামলা চালানো হয়।
গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকির এই বর্তমান প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে চলতি বছরের মার্চ মাসের এক ভয়াবহ ঘটনার পর থেকেই। ১১ মার্চ পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসে সশস্ত্র দলীয় হামলায় ২১ জন সাধারণ যাত্রী ও চারজন নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হন, যা গোটা দেশকে হতবাক করে দিয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকেই এই রুটটিকে ‘অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে রেল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: কেরিয়ারে টুইস্ট! কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে জৈব চাষ শুরু করেই বাজিমাত করলেন অঙ্কুর-রশ্মি
আফগানিস্তানের সঙ্গে চলমান বৈরিতা এবং তালিবান সরকারের সমর্থনপুষ্ট উগ্র গোষ্ঠীগুলির ক্রমাগত হুমকিকে এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিশ্লেষকরা। রেলপথে এই ধারাবাহিক হামলা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কাঠামোর গভীর দুর্বলতাকেই প্রতিফলিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বালোচিস্তানে রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া একটি জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হলেও, এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি ও জনজীবন যে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা সামাল দিতেও বেগ পেতে হবে পাকিস্তান সরকারকে।












