ঘরছাড়া ৮ লক্ষ মানুষ, আরও ভয়াবহ হচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ক্রমাগত আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি। লাগাতার বৃষ্টি এবং বন্যায় বিগত প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরেই বিপর্যস্ত সে রাজ্যের মানুষের জীবন। প্রশাসনের তরফে ক্ষয়ক্ষতির যে পরিসংখ্যান এখনও অবধি প্রকাশ করা হয়েছে তা দেখলে সিউরে উঠতে হয় রীতিমতো। ভয়াবহ এই বন্যায় জলমগ্ন সে রাজ্যের ২৯টি জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঘর ছেড়েছেন প্রায় ৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও এনডিআরএফ।

অসম সরকার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যের ২৯ টি জেলার প্রায় ২৫৮৫ টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। ঘরছাড়া হয়েছেন ৮ লক্ষ ১২ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাগাঁও জেলা। প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন ওই একটি জেলাতেই। ক্ষতিগ্রস্ত কাছার জেলাও। সেখানেও বন্যার কবলে সর্বশ্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। হোজাই জেলাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ৩০০ জন।

বন্যা কবলিত এলাকা গুলিতে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, প্যারামিলিটারি বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। নৌকা এবং হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এখনও অবধি ২১ হাজার ৮৮৪ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও লাগাতার চলছে ধস এবং বৃষ্টি। দক্ষিণ অসমের দিমা হাসাও জেলার সঙ্গে বিগত ৬ দিন ধরে বিচ্ছিন্ন বাকি গোটা রাজ্যের সংযোগ ব্যবস্থা। ধসের জেরে ভেঙে পড়েছে সড়ক এবং রেললাইন ব্যবস্থা। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এই এলাকার মানুষদের উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতখানি তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন ইসরোর একদল বিজ্ঞানী। উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বন্যাকবলিত এলাকা গুলি চিহ্নিত করে উদ্ধারকাজ চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলিকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষনা করেছে অসম সরকার। ইতিমধ্যেই ইউনিসেফের তরফেও একটি দল পৌঁছেছে অসমে ত্রান কার্যের জন্য। সরকারের তরফেও খোলা হয়েছে কয়েকশো ত্রান বিতরণ কেন্দ্র। সব মিলিয়ে যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে অসমের পরিস্থিতি তা বলাই বাহুল্য।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর