বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলচণ্ডী (Mangalchandi) হলো প্রকৃতঅর্থে একটি ব্রত। এখানে ‘মঙ্গল’ শব্দের অর্থ ‘শুভ’ বা ‘হিতকর’ এবং ‘চণ্ডী’ শব্দের অর্থ, ‘দেবী দুর্গা’। এই ব্রত পালনের নিয়মে দেবী হিসেবে মা দুর্গার পুজো করা হয়। বাংলার জৈষ্ঠ মাসের চারটি মঙ্গলবারে মূলত মহিলারা এই ব্রত পালন করে থাকেন।
পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মানুষজন সাধারণত এই মঙ্গলচণ্ডী ব্রত অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। প্রধানত ব্রাহ্মণ দ্বারাই এই পুজো করা হয়ে থাকে। পরিবার, স্বামী এবং পুত্রের মঙ্গল কামনায় বাড়ির মহিলারা সাধারণত এই পুজো করেন।
মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের মন্ত্র
” জৈসা ললিত কান্তাক্ষা,দেবী মঙ্গল চন্ডীকা। বরদাভয় হস্তা চ দ্বিভুজা গৌর দেহিকা, রক্তবস্ত্র শনস্থা চ রতনৌজ্জ্বল মন্ডিতা ।। রক্তকৌশীয় বসনা স্মিত বক্ত্রা শুভাননা, নব যৌবন সম্পনা, চারবঙ্গীন ললিতপ্রভা।। ঔঁ হ্রীং স্রীং মঙ্গলচন্ডীকায়ৈ নমঃ।”
এই পুজোর ক্ষেত্রে দেবীর মূর্তি পুজো করা হয় না। এক্ষেত্রে ঘট পুজো করা হয়। ”ষোলোবাটা” এই হল এই ব্রতের প্রধান প্রসাদ। ষোলোরকমের বস্তু দ্বারা নির্মিত এই পূজার নিয়ম। পুজো শেষে উপোসীকৃত মহিলারা প্রসাদ ভক্ষণ করেন। পুজোর বিষয়ের এই ষোলোবাটার ষোলোরকমের উপকরণ নিয়ে নানান মুনির নানান মত রয়েছে।
‘মঙ্গল থলি’ এবং ‘পুঙ্গি‘ হল এই পুজোর অন্যতম প্রধান দুটি জিনিস। গৃহের মঙ্গলার্থে রক্তবর্ণ শালুতে বাঁধা হরিতকি ফল, আতব চাল ইত্যাদি দিয়ে পুজোর জন্য মঙ্গলথলি তৈরি করা হয়। সেইসঙ্গে কাঁঠাল পাতার ভিতরে তেরোটা ধান, তেরোটা আতব চাল এবং অন্যান্য বস্তু তেরোটা করে দিতে হয়। তারপর কাঁঠাল পাতার মুখে তেরোটা দূর্বা ঘাস দিয়ে তৈরী করা হয় পুজোর নৈবেদ্য। এইভাবে পুজো সম্পন্ন হয়ে থাকে।