বাংলাহান্ট ডেস্ক : গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation) বিল্ডিং অনুমোদনের বিষয়ে সচেষ্ট হয়ে উঠেছে। বন্দর এলাকায় নির্মীয়মান আবাসন ভেঙে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। তারপর থেকে পুরসভা (KMC) একাধিক বিজ্ঞপ্তি (Notice) জারি করেছে দফায় দফায়।
মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে পুর কমিশনার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে অনুমোদনহীন নকশা অনুযায়ী চলা নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য একযোগে নজরদারির নির্দেশ দেন পুরসভার কর-রাজস্ব, বিল্ডিং এবং লাইসেন্স বিভাগকে। পুর কমিশনারের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ইতিমধ্যেই মিউটেশন হয়ে যাওয়া বাড়ি অপরিবর্তিত অবস্থায় হাত বদল হলে নতুন ক্রেতার সমস্যা হবে না মিউটেশনের জন্য।
আরোও পড়ুন : হল্ট স্টেশনের টিকিট কাটতে গিয়ে জেরবার? নো টেনশন! এবার শিয়ালদহ ডিভিশনে নয়া ব্যবস্থা রেলের
তবে কর-রাজস্ব বিভাগ, লাইসেন্স বিভাগ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তরফে নজরদারি চালানো হবে নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে। মিউটেশন দেওয়ার আগে সমস্ত বিভাগ পরীক্ষা করবে। পুর কমিশনার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অনুমোদিত অংশের বাইরে যদি কোনও অংশ নির্মাণ করা হয় তাহলে সেটিকে মিউটেশনে উল্লেখ করা হবে ‘দখলদারি’ হিসাবে।
আরোও পড়ুন : আর্টসে ৪০০’র মধ্যে ৩৯৯! ISC’তে রাজ্যে প্রথম রীতিশা হতে চান সাংবাদিক, জানুন তার সাফল্যের রহস্য
আর সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এখানেই। কলকাতা পুরসভার ৬৬ এবং ৯৫ থেকে ১০০ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও সংলগ্ন বেশ কিছু অঞ্চলের কিছু অংশ কলোনি এলাকা। কলোনি এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ বছর ধরেই বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের অনুমতি ছাড়াই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন। আবার অনেকেই সেই পুরনো বাড়িতেই নির্মাণ করেছেন অতিরিক্ত অংশ।
আরোও পড়ুন : বাম এজেন্টকে মারধর! কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে-ভুয়ো এজেন্টকে বের করলেন সেলিম, ধুন্ধুমার!
৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনি এলাকার এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘আমাদের পূর্বসূরিরা উদ্বাস্তু অবস্থায় পালিয়ে এসে কোনও মতে মাথা গোঁজার আশ্রয় পেয়েছিলেন। তখন নিজেদের মতো করে ছোটখাটো বাড়ি বানিয়েছিলেন তাঁরা, যার নকশা অনুমোদনের প্রয়োজন হত না। হঠাৎ করে পুর কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখছি।’’
যাদবপুরের বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানাচ্ছেন, ‘‘কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের রেজিস্ট্রি ডিড রয়েছে। তাই তাঁদের দখলদার হিসাবে গণ্য করা ঠিক নয়। লোকসভা ভোট মিটে গেলে এ বিষয়ে পুর কমিশনারের সঙ্গে কথা বলব।’’এই অবস্থায় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো নিজেদের বাড়ির রেজিস্ট্রি করিয়েছি। তা হলে কেন আমাদের দখলদার হিসাবে গণ্য করা হবে?’’
গড়িয়াহাট টলি ট্যাক্স বিভাগের এক কর্মীর কথায়, ‘‘কমিশনারের নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলোনির বাসিন্দারা বেঁকে বসেছেন। তাঁরা সাফ জানাচ্ছেন, নিজেদের কিছুতেই ‘দখলদার’ হিসাবে গণ্য করবেন না। তাঁদের বাড়ি, ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করানো হয়েছে। তাই নিজেদের গোটা নির্মাণের মালিক বলেই মনে করেন তাঁরা।’’