বাংলাহান্ট ডেস্ক: সাধারণ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে তাদের বিনামূল্যে আটা দেওয়ার প্রকল্প চালু করেছে শেহবাজ শরিফের সরকার। পাকিস্তানের (Pakistan) পাঞ্জাব প্রদেশে সেই প্রকল্পই এখন গরিব মানুষের জন্য বিপদের একটা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক বস্তা আটা নেওয়ার জন্য সেখানে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষ বেঁধে যাচ্ছে মানুষের মধ্যে। যা নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে প্রশাসনকে। পাকিস্তানে বিনামূল্যে আটা দেওয়ার প্রকল্পই যেন তাদের দারিদ্রের আসল রূপ দেখিয়ে দিচ্ছে।
শুধুমাত্র ১০ কেজি আটা পাওয়ার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ এবং বিশেষত মহিলারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে একটু আটা পাচ্ছেন। রমজানের আগে অবধি পাকিস্তানে কেজিপ্রতি ১১৫৬ টাকা দরে আটা পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু তারপর আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। সরকারের তরফে তাই মানুষের খিদে মেটাতে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে আটা।
সম্প্রতি পাক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, বিনামূল্যে আটা দেওয়া নিয়ে কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর সামনে এসেছে। তাই এখন যেখানে আটা দেওয়া হচ্ছে সেখানে মোতায়েন করা থাকছে পুলিশ। নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া প্রহরায় চলছে আটা দেওয়ার কাজ। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষুধার্ত গরিব সাধারণ মানুষ আটা পাওয়ার জন্য যে কোনও ঝুঁকি নিতেই রাজি হয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
একাধিক বিদ্বজ্জনের মতে, বিনামূল্যে আটা দেওয়ার এই প্রকল্প আসলে দেশের দরিদ্র অবস্থাকেই আরও প্রকট করে তুলছে। যেখানে আটা দেওয়া হয়, সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেন। এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা সকলেই নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। কিন্তু যাঁদের নাম তালিকায় নেই, তাঁরা সমস্যা তৈরি করে অন্যদের ভাগের আটা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে বিভিন্ন জায়গা থেকে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা সামনে আসছে।
পাক সরকারের এই প্রকল্পের উপর তাই প্রশ্ন তুলছেন পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞদল। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ৩০ লক্ষ ব্যাগ আটা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন আরও লম্বা হচ্ছে লাইন। প্রশ্ন উঠছে, কোথা থেকে আসছেন এত মানুষ? তবে কি দিন দিন এতই খারাপ হচ্ছে পাকিস্তানের অবস্থা? তবে কি আরও বেশি সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন? সূত্রের খবর, পাকিস্তানের অবস্থা এতটাই খারাপ যে বৃদ্ধ, মহিলা ও শিশুদেরও নিজেদের জীবন বাজি রেখে আটা নিতে যেতে হচ্ছে।