বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এখন আর চুল পড়তে বয়স লাগছে না! অল্প বয়স থেকেই অনেকের মাথায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে চুল। কলেজ পড়ুয়া থেকে বয়স্ক মানুষ এই সমস্যা এখন সবার। তাই লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই ব্যবহার করে থাকেন পরচুলা। কিন্তু এবার এই পরচুলা পরে ঘোরার দিন অতীত। কলকাতার (Kolkata) সরকারি হাসপাতালে এই প্রথম শুরু হচ্ছে প্লেটলেট রিচ থেরাপি।
বিনামূল্যে টাকে চুল গজাতে ভিড় কলকাতার (Kolkata) এই সরকারি হাসপাতালে
কলকাতার (Kolkata) নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে শুরু হচ্ছে এই প্লেটলেট রিচ থেরাপি। এই বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে একবার চুল গজানোর পর তা আর খোলার ঝামেলা থাকবে না। একেবারে আসল চুলের সাথে এর কোনো পার্থক্য থাকবে না। তাই ইচ্ছা মতোই এই চুলে শ্যাম্পুও করা যাবে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সাধারণত চুল পড়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে বেসরকারি হাসপাতাল গুলিতে এই ধরনের চিকিৎসা করাতে অনেকেই মোটা খরচ করেন।
টাকে চুল গজানোর এই চিকিৎসাই কলকাতার (Kolkata) নীলরতন মেডিকেল কলেজে করানো হচ্ছে একেবারে বিনামূল্যে। এন আর এস-এর ত্বকরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অরুণ আচার জানিয়েছেন এই প্লেটলেট রিচ থেরাপির জন্য রোগীকে অনেকগুলো সিটিং নিতে হয়। বেসরকারি হাসপাতালে এক একটা সিটিং-এর জন্য খরচ হয় মাথাপিছু ৮ হাজার টাকা। রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে বিগত কয়েক দিনে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। কয়েকদিন আগেই নীলরতন হাসপাতালে ত্বকরোগ বিভাগে অত্যাধুনিক সমস্ত যন্ত্রপতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। যার মাধ্যমে এবার এই বহুমূল্যের চিকিৎসাও এবার বিনামূল্যে পেয়ে যাচ্ছেন বাংলার মানুষ।
কি এই পিআরপি থেরাপি?
ত্বক রোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর অরুণ আচার জানিয়েছেন এই থেরাপিতে প্রথমে রোগীর ২০ এমএল রক্ত নেওয়া হয়। তারপর ওই রক্ত থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় আলাদা করা হয় প্লেটলেট। এরপর মাথায় যেখানে যে অংশের চুল নেই সেখানে ইনজেক্ট করা হয় ওই প্লেটলেট। প্রত্যেকবার ইনজেক্ট করে দেখা হয় কতটা চুল গজালো। এই প্লেটলেটের মধ্যে একটা গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে। এই বিশেষ থেরাপিতে কম করে তিনবার আর প্রয়োজনে তারও বেশি সিটিং নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যের প্যারা টিচারদের জন্য বিরাট সুখবর! বড় রায় কলকাতা হাইকোর্টের
বিনামূল্যে এই চুল পড়ার সমস্যায় সমাধানের খবর মিলতেই সব ‘টেকো’রা ভিড় জমাচ্ছেন নীলরতন হাসপাতালে এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন মূলত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করাই সরকারি হাসপাতালে হাসপাতালের লক্ষ্য। বর্তমানে নীলরতন হাসপাতালে প্রতি ১০০ জন রোগীর মধ্যে দশজনই আসছেন এই টাকের সমস্যা নিয়ে। তাদের মধ্যে মহিলা পুরুষ সকলেই রয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন পুরুষদের ক্ষেত্রে চুল পড়া বা বল্ডনেসের ক্ষেত্রে নানান রকম ফের আছে। এছাড়াও চুল পড়ার সমস্যার ক্ষেত্রেও একাধিক ধাপ রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো রোগী যদি স্টেজ ১ অথবা স্টেজ ২-তে হাসপাতালে আসেন তাহলে এক্ষেত্রে এই থেরাপি অত্যন্ত দ্রুত কাজ করে। ইদানিং নীলরতন হাসপাতালের ভিড় বলছে সকলের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে চুল পড়ার সমস্যা। যার জন্য মূলত দূষণকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।