বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুলের মধ্যে বসবাস করছে ৩৫টি পরিবার। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলে গেলে দেখা যাবে এমনই চিত্র। জানা যাচ্ছে, কিছু পরিবার ২০২২ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ে থাকে, কিছু পরিবার আবার আশ্রয় নিয়েছে ২০২৩ সালে। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বিদ্যালয়ে থাকছেন তাঁরা?
আসলে গঙ্গা ভাঙন (Ganga Erosion) গ্রাস করেছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) এই পরিবারগুলির ঘর-বাড়ি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে স্কুলে আশ্রয় নেন তাঁরা। এরপর থেকে প্রতাপগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলই তাঁদের ঠিকানা। বিড়ি বেঁধে এখানেই কোনও ভাবে সংসার চালাচ্ছে এই পরিবারগুলি। আগামীদিনে কী হবে সেই বিষয়ে ধারণা নেই তাঁদের!
জানা যাচ্ছে, প্রতাপগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলের এক একটি ঘরে ঠাসাঠাসি করে কমপক্ষে ৪-৫টি করে পরিবার থেকে। বিগত প্রায় দু’বছর ধরে এভাবেই দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। এদিকে সূত্র মারফৎ আবার জানা যাচ্ছে, স্কুলে যে পরিবারগুলির বসবাস, তাঁদের জন্য লস্করপুর এলাকায় জমির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁদের পাট্টার ব্যবস্থা করেছেন। তা সত্ত্বেও কেন স্কুলে থাকছেন তাঁরা?
আরও পড়ুনঃ পেশায় স্কুল শিক্ষিকা, হাতে BJP-র পতাকা নিয়ে স্বামীর জন্য রাতদিন ছুটছেন, চেনেন সুকান্ত পত্নীকে?
জানা যাচ্ছে, সরকারের নির্ধারিত জমি একেবারেই না-পসন্দ ওই পরিবারগুলির। ঘরছাড়াদের একাংশের কথায়, ওই এলাকা যেমন অনেক দূর, তেমনই ওখানে ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষরা বসবাস করেন। তাঁদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে দাবি করেন কেউ কেউ। আর সেই কারণেই ওখানে যেতে চাইছেন না তাঁরা। গাদাগাদি করে হলেও স্কুলেই থাকছে ওই পরিবারগুলি।
এদিকে আবার প্রতাপগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলে পড়ুয়ারাও নিয়মিত পড়তে আসে। একদিকে ৩৫ পরিবারের বসবাস, অন্যদিকে পড়ুয়াদের ক্লাস করতে আসা, সব মিলিয়ে অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে। এসবের মাঝেই আবার ভোটও এসে গিয়েছে। এই আবহে ওই ৩৫ পরিবারের সদস্যরা কোথায় যাবে? তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই আগেই গ্রাস করেছে গঙ্গা। এদিকে জানা যাচ্ছে, স্কুলের মধ্যে পরিবারগুলির থাকার কারণে সমস্যাও দিন দিন বাড়ছে। সব মিলিয়ে, ভোটের মুখে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বেশ চাপে পড়েছে বলেই খবর।