‘নির্মাণ বেআইনি ছিল’, স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী! মৃত্যুর দায় কার? ‘কড়া’ পদক্ষেপের আশ্বাস মমতার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রবিবার মধ্যরাতে আচমকাই ভেঙে পড়ে গার্ডেনরিচের একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ (Garden Reach Building Collapse)। তার আশেপাশে ছিল একাধিক ঝুপড়ি। বহুতলের একাংশ ভেঙে সেই ঝুপড়িগুলির ওপরেই পড়ে। গতকাল রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে। এখনও অবধি দুই মহিলার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা একাধিক। গার্ডেনরিচে এই দুর্ঘটনার খবর শুনে মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই সেখানে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

সূত্রের খবর, গতকাল রাতে সাড়ে এগারোটা-বারোটা নাগাদ নির্মীয়মাণ বহুতলটির একাংশ ভেঙে পড়ে (Building Collapse)। বহু মানুষ সেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানার পুলিশ, দমকল বাহিনী এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্থানীয়রাও উদ্ধারকাজ শুরু করেন।

সোমবার সকাল হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়, কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম এবং দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও মমতার সঙ্গে ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করে নেন বেআইনি নির্মাণের কথা। তিনি বলেন, ‘এটা ভীষণ ঘিঞ্জি এলাকা। মন্ত্রীরা সারারাত এখানে ছিলেন। প্রোমোটারদের একাংশ বেআইনিভাবে বাড়ি তৈরি করেন। তার আগে ভাবা উচিত, আশেপাশে যারা আছেন তাঁদের যেন ক্ষতি না হয়। শুনলাম প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বহুতলটি তৈরি করা হয়নি’। মুখ্যমন্ত্রী এরপর মৃতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনঃ আজই কাটা হবে সেলাই! কপালে ব্যান্ডেজ বেঁধেই গার্ডেনরিচে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটলেন মুখ্যমন্ত্রী

এদিকে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। গতকাল রাতে অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এর মধ্যেই ঘটে যায় বিপর্যয়। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েন অনেকে। এদিকে যারা কোনও মতে রক্ষা পেয়েছেন তাঁদের মনেও চেপে বসেছে আতঙ্ক। পরিচিতদের হারানোর কষ্টের পাশাপাশি বেআইনি নির্মাণ নিয়েও সরব হন তাঁরা।

একজন স্থানীয় মহিলা যেমন জানিয়েছেন, বহুতম নির্মাণের সময় তাঁর মামা আপত্তি করেছিলেন। তখন জানানো হয়েছিল ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন কে দেখবে? সংশ্লিষ্ট মহিলার প্রশ্ন, ‘আমরা তো গরিব। আমাদের ঘরটা কী করে হবে? বিল্ডিং তোলার সময় আমার মামা আপত্তি করেছিল। তখন বলেছিল ঠিক করে দেব। এখন ভেঙে গিয়েছে… আমার মামির অত বড় ক্ষতি হল। কে দেখবে? ওরা তো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তখন বলা হয়েছিল অতদূর তুলো না। কিন্তু শোনেনি। আজ এই ক্ষতিপূরণ কে করবে?’

garden reach building collapse

আর একজন বাসিন্দার আবার অভিযোগ, সয়েল টেস্ট ছাড়াই বহুতল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এখানে না সয়েল টেস্ট হয়েছে না কিছু হয়েছে। এখানে এই রকম বহু বিল্ডিং এখানে হয়ে রয়েছে। এখানে সবই সম্ভব। আশেপাশে ২-৩টে বাড়ি চাপা পড়ে গিয়েছে। বাকি বাড়িরও ক্ষতি হয়েছে’। সয়েল টেস্ট ছাড়া কীভাবে বহুতল নির্মাণ করা যায় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর