বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভিখারির দশা পাকিস্তানের (Pakistan)। দেউলিয়া হওয়ার কিনারে দাঁড়িয়ে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। চরম আর্থিক সংকট (Financial Crisis) থেকে রেহাই পেতে ঋণ (Loan) ছাড়া আর কোনও উপায় নেই! কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (International Monetary Fund) বা আইএমএফও (IMF)। এই পরিস্থিতিতে টাকা ধার করতে মাঠে নামলেন খোদ দেশের সেনাপ্রধানই। ‘বন্ধু’ মধ্যপ্রাচ্যের (Middle East) একাধিক দেশে দৌড়ে বেড়ালেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান (Pakistan Army Chief) জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া (General Qamar Javed Bajwa)। তাঁর হঠাৎ সৌদি আরব (Saudi Arabia) এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (United Arab Emirates) সফর নিয়ে এমনই দাবি করছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
আর্থিক সংকটের শুরু থেকেই আইএমএফ-এর কাছে ঋণের আবেদন জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। জানা যাচ্ছে, কয়েকদিন আগেই আইএমএফের বেলআউট প্যাকেজের প্রথম কিস্তির টাকা পেতে হোয়াইট হাউসের সঙ্গেও কথা বলেন জেনারেল বাজওয়া। ঋণের টাকা পেতে এই মুহুর্তে পাকিস্তানের দরকার একজন গ্যারান্টার। সেই গ্যারান্টারের খোঁজেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরে গিয়েছেন বাজওয়া। এমনই দাবি করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলি। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই বিষয়ে চিনের সঙ্গেও কথা বলেছে ইসলামাবাদ। কিন্তু এই মুহুর্তে নিজেই আর্থিক সংকটে বেজিং। তাই সেখানে ঠিক সুবিধা হবে না বুঝে এক রকম বাধ্য হয়েই মধ্যপ্রাচ্যে দৌড়লেন পাক সেনাপ্রধান।
এপ্রিল মাসেও সৌদি আরব যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। রিয়াধ থেকে খালি হাতেই ফিরে আসতে হয় তাঁকে। পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেন তিনি। ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে শেয়ার কেনার জন্য পাকিস্তানকে প্রস্তাব দেয় দুবাই। আইএমএফের থেকে ঋণ পেতে এই দুই দেশ গ্যারান্টার হিসেবে পাশে দাঁড়াবে বলে দাবি করছে পাকস্তানের মিডিয়া। জানা যাচ্ছে, গত মঙ্গলবার কপ্টার ভেঙে মৃত্যু হয় পাকিস্তানের এক লেফটেন্যান্ট জেনারেল-সহ মোট ৬ জনের। ওই ঘটনার পরই শোকবার্তা দিয়ে পাক সেনাপ্রধানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন আরব আমিরশাহীর প্রেসিডেন্ট। ওই সময় আর্থিক সংকট থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে আরব আমিরশাহীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন জেনারেল বাজওয়া।
সূত্র মারফত আরও জানা যাচ্ছে, আইএমএফের ঋণ পেতে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যানের সঙ্গেও ফোন কথা বলেন বাজওয়া। ১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য আইএমএফের উপর চাপ তৈরি করতে শেরম্যানকে অনুরোধ করেন তিনি। এই বিষয় নিয়ে সরব হন ইমরান খান। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমেরিকা বর্তমান পরিস্থিতিতে সাহায্য করলে, তার বিনিময়ে কী চাইবে? আশঙ্কা করছি, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিক্রি করে আন্তর্জাতিক বাজারে ধার শোধ করার রাস্তায় হাঁটছে পাকিস্তান। এই মর্মে পাশ হয়েছে বিলও।