আর “লেট” হবে না ট্রেন! দেশজুড়ে ৪ টি সুপারফাস্ট করিডোরের জন্য ২৪,৬৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ সরকারের

Published on:

Published on:

Government is taking big steps for Indian Railways.

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে রেলপথকে (Indian Railways) আরও নিরাপদ এবং গতিশীল করে তোলার লক্ষ্যে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। যার ফলে প্রত্যক্ষভাবে লাভবান হচ্ছেন যাত্রীরা। ঠিক এই আবহেই এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় রেলপথকে আরও উন্নত করতে এবং ট্রেন লেট হওয়ার বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে সম্পন্ন হওয়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।

আরও গতিশীল হবে রেল (Indian Railways):

এই প্রকল্পগুলিতে ২৪,৬৩৪ কোটি (প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার) টাকার বিশাল ব্যয় করা হবে। যার লক্ষ্য হল দেশের ব্যস্ততম রেল (Indian Railways) নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণ এবং গতিশীল করা। এই প্রকল্পগুলির অধীনে মোট ৮৯৪ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক আপগ্রেড করা হবে। পাশাপাশি, বিদ্যমান লাইনগুলি ৪ বা ৬ লেনে সম্প্রসারিত করা হবে। এই সিদ্ধান্ত কেবল যাত্রীদের জন্য ভ্রমণকে আরামদায়ক করবে না বরং দেশের অর্থনীতিতেও নতুন গতি সঞ্চার করবে।

৪ টি রাজ্যের বদলে যাবে ছবি: এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, এই ৪ টি প্রকল্প দেশের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ৪ টি রাজ্য – মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট এবং ছত্তিশগড়ের মধ্য দিয়ে যাবে। এই রাজ্যগুলির মোট ১৮ টি জেলা এই মেগা প্রকল্প থেকে সরাসরি উপকৃত হবে।

Government is taking big steps for Indian Railways.

১. ওয়ার্ধা-ভুসাবল সেকশন: মহারাষ্ট্রে স্থিত মোট ৩১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রুটটি মুম্বাই-হাওড়া করিডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই রুটে তৃতীয় এবং চতুর্থ লাইন নির্মাণের ফলে ট্রেন চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে গতি পাবে।

২. গোন্ডিয়া-ডোঙ্গারগড় সেকশন: মহারাষ্ট্র ও ছত্তিশগড়কে সংযুক্ত করা ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেল সেকশনটি মুম্বাই-হলদিয়া লাইনের ওপর পড়ে। এখানে চতুর্থ লাইন নির্মাণের ফলে মালবাহী এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য পৃথক ট্র্যাক (Indian Railways) তৈরি হবে। যা রেল চলাচলকে সহজতর করবে।

আরও পড়ুন: ICC টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ভারত! প্রথম স্থানে কে?

৩. ভদোদরা-রতলাম সেকশন: গুজরাট থেকে মধ্যপ্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এই ২৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি দিল্লি-মুম্বাই করিডোরের মেরুদণ্ড। এই অংশটির আপগ্রেডের ফলে রাজধানীতে যাত্রা আরও দ্রুত হবে।

৪. ইটারসি-ভোপাল-বিনা সেকশন: মধ্যপ্রদেশের এই ২৩৭ কিলোমিটার রুটে চতুর্থ লাইনট নির্মিত হবে। এটি দিল্লি-চেন্নাই রুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন। যার মধ্য দিয়ে চলাচলকারী কয়েকশ ট্রেন লাভবান হবে।

এই প্রকল্পগুলি কেনগুরুত্বপূর্ণ: এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে সরকার কেন এই ৪ টি রুট বেছে নিল? এই প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তি ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে, এই ৪ টি প্রকল্প দেশের ৭ টি ব্যস্ততম রেলপথের (Indian Railways) অংশ। এই রুটগুলিতে সবসময় চাপ থাকে। জেনে অবাক হবেন যে দেশের ৪১ শতাংশ পণ্য এবং ৪১ শতাংশ যাত্রী পরিবহণ এই রুটগুলি দিয়েই সম্পন্ন হয়। ওই রুটগুলিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ট্রেন চলাচলের কারণে, ট্রেনগুলি প্রায়শই দেরিতে চলে এবং যানজট লেগেই থাকে। এই লাইনগুলি প্রশস্ত করার ফলে কেবল যাত্রীবাহী ট্রেনগুলির সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত হবে না, বরং মালবাহী ট্রেনগুলির জন্য একটি ডেডিকেটেড করিডোরও তৈরি হবে। এর ফলে শিল্পে কাঁচামাল এবং বন্দরে পণ্য পরিবহণ অনেক দ্রুত এবং সহজ হবে।

আরও পড়ুন: ভারতে ফিরলেই হবে “তদন্ত”! কী এমন করলেন বৈভব সূর্যবংশী?

২০৩১ সালের মধ্যে রেলপথ নতুন জীবন পাবে: উল্লেখ্য যে, এই প্রকল্পগুলির সমাপ্তি ভারতীয় রেলের (Indian Railways) জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। ট্র্যাকের ওপর চাপ কম থাকলে, ট্রেনগুলি তাদের সর্বোচ্চ গতিতে চলতে সক্ষম হবে। এর ফলে সফরের সময় কমবে এবং যাত্রীরা দ্রুত তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। এর ফলে মালবাহী ট্রেনের গড় গতিও বৃদ্ধি পাবে। যা বর্তমানে খুবই কম। সরকার ২০৩০-৩১ সালের মধ্যে এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েছে।