বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে কন্যাশ্রী, কৃষকবন্ধু থেকে রূপশ্রী, একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে উপভোক্তাদের অনুদান দেয় রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)। এই সকল প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে সরাসরি গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এবার এই ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার তথা ডিবিটির ক্ষেত্রে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। অনুদানের টাকা সুরক্ষিত রাখতে নেওয়া হল নতুন পদক্ষেপ।
সরকারি প্রকল্পের টাকা সুরক্ষিত রাখতে কী পদক্ষেপ নিল রাজ্য (Government of West Bengal)?
সম্প্রতি ‘তরুণের স্বপ্ন’ চুরি নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলা। সরকারের দেওয়া ট্যাবের টাকা বেহাত হওয়া নিয়ে প্রশাসনের অন্দরেও জোর শোরগোল পড়ে যায় বলে খবর। এরপর সরকারের আরও বেশ কয়েকটি ডিবিটি প্রকল্পে (Government Scheme) এই সমস্যা চোখে পড়ে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য। এবার জানা গেল, ডিবিটির ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি দফতরকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সুরক্ষাবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
রিপোর্ট বলছে, অর্থ দফতরের তরফ থেকে মোট ১৬ দফা এসওপি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রত্যেকটি দফতরের কর্তাকে এই বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ডিবিটি পদ্ধতিতে সুরক্ষাবিধি মানতেই হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (Reserve Bank of India) অধীন এনপিসিআই মারফৎ প্রত্যেক গ্রাহকের তথ্য যাচাই করাতে হবে।
আরও পড়ুনঃ অভিষেক নন! মমতার উত্তরসূরি কে? রাখঢাক না রেখেই জানিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো
যে সকল ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা হবে, সেসব ক্ষেত্রে কাগজপত্র থাকবে না। সবটা অনলাইনে পরিচালিত হবে। তবে পরিষেবা পাওয়ার জন্য লিখিতভাবে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে অন্য ওয়েবসাইট থাকবে। সেটি এমনভাবে বানানো হবে, যাতে সরকারের (Government of West Bengal) তরফে যিনি তথ্য নথিবদ্ধ করছেন কিংবা সায় দিচ্ছেন তাঁদের সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
অর্থ দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ডিবিটির ক্ষেত্রে এবার দু’বার করে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর নথিবদ্ধ করতে হবে। প্রথমবার হবে মাস্কড। এরপর ফের তা নথিবদ্ধ করতে হবে। গ্রাহকের ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের প্রথম পাতা কিংবা বাতিল চেকের ছবি আপলোড করার বন্দোবস্ত থাকবে। এটিই হবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোডের প্রমাণ।
যদি একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নানান নামে থাকে তাহলে সেটি এবার সহজে জানা যাবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আইএসএসসি তালিকা অনুসারে সেই নম্বর যাচাই করা হবে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ব্যাঙ্ক ব্রাঞ্চ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে কিংবা সেটা দেখা হবে। গ্রুপ এ লেভেলের আধিকারিক অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুমোদন করবেন। যদি কোনও কারণে টাকা পাঠানো সম্ভব না হয়, তাহলে সেটা সংশোধন করা যাবে না। সেটা ফের সরকারের কাছেই ফিরে আসবে। এসএমএসের মাধ্যমে উপভোক্তাকে প্রাপ্যের অবস্থা জানিয়ে দেবে সরকার।
সরকারি প্রকল্পের (Government of West Bengal) টাকা নয়ছয় আটকাতে রাজ্যের এই পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ‘তরুণের স্বপ্ন’ নিয়ে যে পরিস্থিতি হয়েছিল তার পরেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন আধিকারিকদের একাংশ। অনুদান প্রদানকারী নানান প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই রকম সুরক্ষাবিধি কার্যকর করায় টাকা নয়ছয় অনেকখানি আটকানো যাবে বলে অনুমান অনেকের।