বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই আবহেই গতকাল রাজ্যপাল (Governor) সি ভি আনন্দ বোসের (C V Ananda Bose) সাথে একান্ত সাক্ষাৎ করেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠকের শেষে সুকান্ত জানান রাজ্যে দুর্নীতি এবং হিংসার কথা উঠে এসেছে আলোচনায়। অন্যদিকে এদিনই রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোট করানোর আশ্বাস দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
শনিবার সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে রাজ্যপালের সাক্ষাৎ নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতর। তবে এদিনই রাজভবন থেকে এক প্রেস বিবৃতি (Press Statement) জারি করে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, নির্বাচনে হিংসার কোনও স্থান নেই। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় জন্যে সময়োচিত এবং সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘আপনি যতই উঁচু পদে থাকুন না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন।’ শনিবার সাক্ষাতের পর সুকান্ত বলেছিলেন, ‘ রাজ্যজুড়ে হিংসার খবর আমরা তাকে জানিয়েছি। রাজ্যপাল বলেছেন কোনওরকম হিংসা বরদাস্ত করা হবে না।’ অন্যদিকে এদিন রাজ্যপালের মুখেও উঠে এল এই একই কথা। দুর্নীতির উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, কোনও ভাবেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হবে।
পাশাপাশি রাজ্য সরকার যে পদ্ধতিতে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করেছে, সেটা বিধিসম্মত নয় বলেও জানানো হয়। যার জন্য আইনে সংশোধনী আনার কথাও বলা হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারেরও মত রয়েছে বলেই রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালকে ঘিরে নজিরবিহীন বিক্ষোভে সামিল হন বিজেপি বিধায়করা! বাংলায় বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই রাজ্যপালের ভাষণকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর।
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধীরা। ক্রমাগত চোর ধরো জেল ভরো শ্লোগান তুলতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বিধানসভার ভিতরে বিক্ষোভের পর বাইরেও চলে বিক্ষোভ। এদিন রাজ্যপালের বক্তব্যের শুরু থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর। ঘটনার পর একদিকে যখন বিজেপির একটা বড় অংশের সাথে রাজ্যপালের দুরুত্ব কিছুটা হলেও বেড়েছে বলে মনে করছিলেন অনেকে, সেই আবহেই সুকান্ত-রাজ্যপাল সাক্ষাৎ বঙ্গ রাজনীতিতে অন্য মাত্রা যোগ করল।
অন্যদিকে, লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘দুর্নীতির ইস্যুতে জিরো টলারেন্স নীতির কথা তো আমাদের নেতারাও বলছেন। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা রেখে বিজেপি জিরো টলারেন্সের কথা বলবে, এটা কী করে হবে?’
গতকাল সুকান্ত-রাজ্যপাল সাক্ষাতের পরও কুণাল বলেছিলেন, “রাজ্য যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তেমন রাজ্যপালও দুর্নীতি মুক্ত পরিবেশ চান। এটা আর নতুন কি। সি ভি আনন্দ বোস তো সংবাদমাধ্যমে যথেষ্ট কথা বলেন। তার আপ্ত সহায়কও আছে। তাহলে সুকান্ত মজুমদার কি তার নতুন PRO নাকি? উনি এসে রাজ্যপালের কথাগুলো বলছেন কেন? আসলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে, সুকান্ত মজুমদার করজোড়ে রাজ্যপালের কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়েছিলেন। “