বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত বছরের ডিসেম্বরেই কাশী জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Mosque) সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়েছিল বারাণসী (Varanasi) আদালতে। চাঞ্চল্যকর তথ্য জমা দিয়েছিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Archeological Survey Of India)। পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফে দাবি করা হয়, মন্দিরের কাঠামো ভেঙেই তৈরি করা হয়েছে মসজিদ। এমনকি ঠিক কোন কোন বিষয় দেখে এই সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে তারও একটি তালিকা জমা করা হয়েছে জেলা আদালতে। ASI-এর সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, কোষাগারে জমা উপকরণগুলিও হিন্দুদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সের জরিপে খণ্ডিত মূর্তি, চিহ্ন, মূর্তি, দরজার টুকরো, কলস, হাতি, ঘোড়া, পদ্মফুলসহ অন্যান্য উপকরণ পাওয়া গেছে। গত বছরের ৬ নভেম্বর এই সমস্ত তথ্য প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়। এরপর জ্ঞানবাপীতে শ্রীঙ্গার গৌরীর নিয়মিত দর্শনের দাবিতে আবেদন জানানো হয়। একই সাথে বলা হয়, জ্ঞানবাপীতে হিন্দু মন্দিরের স্বপক্ষে যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে তা ASI এর কাছে হস্তান্তর করা উচিত। এবং প্রয়োজন মত সেই সমস্ত তথ্য প্রমাণ হস্তান্তর করা হবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা তার মনোনীত অফিসারের কাছে
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই উপকরণগুলো নিরাপদে রাখবে এবং আদালত যখনই তাদের তলব করবে তখনই সেগুলো হাজির করতে হবে। এবং এই সমস্ত উপকরণের একটি তালিকা আদালতে এবং একটি তালিকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কী প্রমাণ পেয়েছে প্রত্নতাত্বিকরা?
আরও পড়ুন : ‘কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর পর এবার খেলাশ্রী’, ক্রীড়াবিদদের জন্য ভাতা এবং চাকরির ঘোষণা মমতার
প্রত্নতাত্বিকদের মতে, জ্ঞানভাপি ছিল একটি বড় হিন্দু মন্দির। সমীক্ষা চলাকালীন মোট ৩২টি স্থানে মন্দির সংক্রান্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। সূত্রের খবর, এই জরিপ প্রতিবেদনটি মোট ৮৩৯ পৃষ্ঠার। মসজিদের পশ্চিম প্রান্তের একটি দেওয়াল মূলত হিন্দু মন্দিরের অংশ। এই দেওয়ালের স্তম্ভগুলি মূলত হিন্দু মন্দিরের। এছাড়াও দেবনাগরী, গ্রন্থা, তেলেগু ও কন্নড় ভাষায় লেখা শিলালিপিও পাওয়া গেছে। জনার্দন, রুদ্র ও বিশ্বেশ্বরের শিলালিপিও পাওয়া গেছে। এক জায়গায় মিলেছে মহামুক্তি মণ্ডপ। ইতিহাসবিদদের মতে, এটি অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
আরও পড়ুন : সাগরে ফের ফুঁসছে ঘূর্ণিঝড়, তাণ্ডব চলবে ১২০ কিমি বেগে, চরম সতর্কবার্তা আবহাওয়া দফতরের
ASI মসজিদ নির্মাণে মন্দিরের স্তম্ভ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও বেসমেন্টে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে। অযোধ্যার মতোই মসজিদের আগে মন্দিরের কাঠামো পাওয়া গেছে। গত বুধবার জেলা জজ ডক্টর অজয় কৃষ্ণ বিশ্বেশের আদালত জ্ঞানবাপির সমীক্ষা রিপোর্ট হিন্দু ও মুসলিম উভয় পক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দলগুলো আদালত থেকে তার অনুলিপি পেয়েছে। এরপরেই হিন্দুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট বিষ্ণু শঙ্কর জৈন সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, জরিপ প্রমাণ করেছে যে জ্ঞানবাপি পূর্বে একটি বড় হিন্দু মন্দির ছিল। এটিকে ভেঙ্গে মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। এখন সিলগালা গুদামে আরও একটি সমীক্ষা চালানো হবে।