বাংলাহান্ট ডেস্ক : ফের পিছিয়ে গেল জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলার শুনানি। জ্ঞানবাপী-শৃঙ্গারগৌরী দেবী মামলা আদালত গ্রাহ্য কি না সে বিষয়ে রায় দান আরও দু’দিন পিছিয়ে দিলেন বারাণসীর জেলা আদালতের বিচারক একে বিশ্বেশ। আজ মঙ্গলবার মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রায় দানের কথা ছিল আদালতের। পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৬ মে। ওই দিন বারাণসী আদালত প্রথমে মুসলিম পক্ষের আবেদন শুনবে বলে জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবারই কথা ছিল জ্ঞাপবাপী মসজিদ মামলার শুনানি হওয়ার। মুসলিম পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতেই মামলা শোনার কথা ছিল বারাণসী আদালতের। মুসলিমদের পক্ষ থেকে ১১জন আবেদন করেছেন। ইতিমধ্যেই বারাণসীর জেলা জজ জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে অ্যাডভোকেট কমিশনারের সার্ভে রিপোর্টের বিরুদ্ধে গভীর আপত্তি জানিয়ে মামলার শুনানি করবেন বলে জানা গিয়েছে। হিন্দু এবং মুসলিম দুই পক্ষকে ২৬-মের আগে তাঁদের আপত্তি জানানোর যাবতীয় কারণ আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারক বিশ্বেশ হিন্দু ও মুসলিম পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায় দান স্থগিত রেখেছিলেন। আজ ওই মামলার বিষয়ে আদালত জানিয়েছে, মুসলিম পক্ষ কেন মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আপত্তি তুলেছে সে ব্যাপারে তাদের আরও বক্তব্য পরশু শুনবে আদালত।মুসলিম পক্ষের বক্তব্য, মামলাগুলি আদালতের বিচারকার্যের আওতায় পড়ে না। কারণ, সেগুলি আইনসিদ্ধ নয়। মামলায় দাবি করা হয়েছে, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্ত্বরে থাকা শৃঙ্গারগৌরী দেবী মূর্তিকে পুজো করার অনুমতি দিতে হবে।
সূত্রের খবর, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৭১১ ধারা অনুসারে মুসলিম পক্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছে। তাঁরা সার্ভে রিপোর্টের আপত্তি জানিয়ে আবেদন করেছে। অন্যদিকে হিন্দু পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন এই মসজিদ জবর দখল করে তৈরি করা হয়েছে। অপরদিকে হিন্দু সেনার পক্ষ থেকে বিতর্কিত জ্ঞানবাপী মসজিদ অন্যত্র সরানোর দাবিও জানানো হয়েছে। হিন্দু সেনার পক্ষ থেকেই দাবি করা হয় যেখানে জ্ঞাপবাপী মসজিদ তৈরি করা হয়েছে সেখানে পূর্বে এক শিব মন্দির ছিল। তার একাধিক প্রমাণও মিলেছে। কাজেই মসজিদ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে তাঁরা।
বারাণসীর মন্দিরের পাশেই রয়েছে এই জ্ঞানবাপী মসজিদ। এই মসজিদ শিব মন্দিরের জায়গায় তৈরি করা হয়েছে এই অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়। সেই মামলাতেই আদালত ভিডিওগ্রাফির মধ্যে দিয়ে আর্কিওজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই ভিডিওগ্রাফিতে দেখা গিয়েছে মসজিদের একাধিক জায়গায় মন্দিরের নকশা রয়েছে। মসজিদের ভেতরে যে কুয়ো রয়েছে তাতে শিবলিঙ্গ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এই নিয়ে মামলা আজ প্রথম নয়। অতীতে ১৯৯১ সালেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। তখনই দাবি করা হয়েছিল জ্ঞানবাপী মসজিদের ভেতরে শিবমন্দির রয়েছে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে হামলা চালিয়েছিেলন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। তিনিই মন্দিরের একটি অংশ ভেঙে মসজিদ তৈরি করিয়েছিলেন।
২০১৯ সােল এই জ্ঞানবাপী মসজিদে আর্কিওজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার সমীক্ষার উপর স্থগিতাদেশজারি করেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এবার কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের বাইরে মসজিদের ভেতরে শিবমন্দির নিয়ে ফের বারাণসী আদালতে আবেদন করে হিন্দু সেনা সংগঠন। তাঁরা মসজিদ অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন। সম্প্রতি হিন্দু নারীরা মসজিদের ভেতরে গৌরীমূর্তির প্রতিদিন পুজো করার দাবি জানায়। এবং তাঁরা প্রতিদিন মসজিদের পশ্চিম দিকের দেয়ালের ভেতরে থাকা মূর্তির পুজো করার অনুমতি চায়। তাই নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা দেশে। জ্ঞানবাপী মসজিদের পরেই এবার মথুরাতেও মসজিদ সরানোর দাবি উঠে আসছে। এই নিয়ে ইতিমধ্যে আদালতে মামলাও দায়ের হয়েছে।