বাংলা হান্ট ডেস্ক: মানুষের সাফল্য যে কোন পথে আসবে তা আঁচ করতে পারেন না কেউই। ঠিক যেমন ঘটেছে ৪৩ বছর বয়সী কাকাসাহেব সাওয়ান্তের সাথেও। একটা সময়ে অটো মোবাইল কোম্পানিতে ভালো ধরণের চাকরি করলেও কিছুতেই মানসিক প্রশান্তি পাচ্ছিলেন না তিনি। তারপরে চাকরি ছেড়ে তিনি বেছে নিয়েছিলেন একদম ভিন্ন ধরনের এক কাজ। আর তাতেই সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যান কাকাসাহেব। শুধু তাই নয়, এখন প্রতি মাসে তিনি উপার্জন করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বর্তমান প্রতিবেদনে তার উত্তরণের কাহিনি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হল।
এখন তিনি একটি নার্সারির কোম্পানি চালান। যেখান থেকে তিনি প্রতি বছর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আয় করেন। যদিও, কাকাসাহেব যখন চাকরি ছেড়ে প্রথম আম গাছ লাগিয়ে কাজ শুরু করেন, তখন অনেকেই তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করলেও এখন সকলেই একবাক্যে তাঁর প্রশংসা করেন।
এদিকে, কাকাসাহেব যখন প্রথম আমের চাষ শুরু করেছিলেন তখন সেভাবে ফলন পাননি তিনি। যার ফলে বহুজন তাঁর সমালোচনা করলেও, কাকাসাহেব তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সবাইকে চুপ করিয়ে দেন। প্রথমে কাকাসাহেব তাঁর দুই ভাইয়ের সাহায্যে, মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার জাট তালুকে অবস্থিত অন্তর গ্রামে প্রায় ২০ একর জমি কিনেছিলেন।
তবে, যে জায়গাটিতে তিনি জমি কিনেছিলেন সেটি ছিল খরাপ্রবণ এলাকা। মোট ২৮০ পরিবারের এই গ্রামটি শহর থেকেও প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল। প্রধানত এই গ্রামে কৃষকেরা বেশিরভাগ সময়ে আঙ্গুর ও ডালিম চাষ করতেন। এছাড়াও সেখানে বাজরা, জোয়ার, গম ও ডালের চাষও হয়। এদিকে, কাকাসাহেব একটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে কাজ করলেও পরে বদলির মাধ্যমে তিনি গ্রামে ফিরে গিয়ে কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।
২০১০ সালে তিনি এই জমিতে আমের বাগান করেন এবং ৫ বছর পর সেখানে ব্যবসার সুযোগ পান। এরপর কাকাসাহেব সরকারের সহায়তায় পুকুর ও জলের সমস্যা সংক্রান্ত অনেক কর্মসূচি পরিচালনা করেন। এতে ওই গ্রামের জল এবং সেচের অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। সমগ্র জমিটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগে আমগাছ লাগিয়ে অন্য ভাগে বিভিন্ন চাষবাস শুরু করেন কাকাসাহেব।
বর্তমানে তিনি ১০ একর জমিতে আম গাছ এবং ১০ একর জমিতে ডালিম ও পেয়ারার মতো ফলের চাষ করেন। বর্তমানে কাকাসাহেব মাত্র ১ একর জমি থেকে প্রতি বছর ২ টন আম উৎপাদন করতে সক্ষম হন এবং এখন অন্য কৃষকরাও তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন। তাঁর বাগানে প্রায় ২২ ধরণের আমের গাছ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল তিনি ২৫ জনের কর্মসংস্থানও করেছেন।