বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিরিয়ানি। যে নামটা শুনলেই আমাদের মুখে জল আর মনে একরাশ আনন্দ জমাট বাঁধে। আমাদের কাছে বিরিয়ানি এমন একটি খাদ্য যা নিমেষে দূর করে দেয় ব্যর্থ প্রেমের দুঃখ থেকে অফিসে বসের কিচিমিচির যন্ত্রণাকে। বন্ধুদের সাথে রেস্টুরেন্টে হ্যাঙ্গওভার হোক বা অনুষ্ঠান বাড়ি। বাঙালির পেটে বিরিয়ানি না পড়লে সবই হয়ে যায় আনন্দহীন। বিরিয়ানি আবিষ্কারের বৃত্তান্ত নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কিন্তু সময়ের চাকার সাথে তাল মিলিয়ে আমরা যতই আধুনিক হই না কেন আমাদের কাছে বিরিয়ানি এক ও অদ্বিতীয়।
১৮৫৬ সালে নবাব ওয়াজেদ আলী শাহকে কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নির্বাসন করা হয়। কলকাতায় আসার পর তিনি মেটিয়াবুরুজ কে দ্বিতীয় লখনউ হিসাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তারপর তিনি বিরিয়ানিতে মাংসের বদলে আলু দেওয়ার প্রচলন শুরু করেন। মুরগি হোক বা মাটন, বা আলু! বিরিয়ানির গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মত। কিন্তু আমরা সবাই দেখেছি বিরিয়ানির দোকানে বিরিয়ানির হাঁড়িটি ঢাকা থাকে লাল কাপড়ে। কিন্তু আপনাদের মনে কখনো প্রশ্ন জেগেছে কী বিরিয়ানির হাঁড়ি কেনো লাল কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে?
এই নিয়ে নানা রকম মতবাদ প্রচলিত আছে। কিছু ইতিহাসিক দের মতে, সম্রাট হুমায়ুনের শাসনকাল দরবারের রীতি অনুযায়ী, রুপোলী পাত্রে খাবার পরিবেশন করার সময় তা লাল কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকতো। অন্যদিকে মাটির বা ধাতুর পাত্রের খাবারগুলি সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে অতিথিদের পরিবেশন করা হতো। পরবর্তীতে মুঘল সাম্রাজ্য কালেও এই রীতি অনুসরণ করা হতো।
অন্যদিকে খাদ্য পরিবেশনের এই রীতি লখনউ-এর নবাবরাও অনুসরণ করতেন। অনেকের মতে সেই থেকেই বিরিয়ানির পাত্রে লাল কাপড় ঢাকার রীতি চলে আসছে। তবে এই নিয়ে অনেক মতবাদ ও মতপার্থক্য আছে। কারোর কারোর মতে, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লাল কাপড় ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে মতবাদ যাই থাকুক না কেন বিরিয়ানি নিয়ে মানুষের ইমোশন দিনদিন বেড়েছে বইকি কমেনি।