বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এখনও আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসে বধূ নির্যাতনের মত অভিযোগ। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে আজও মেয়েদের নানা ধরনের নিষ্ঠুর অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়। যদিও এখন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের মতই এক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধা দুই’ই আছে। তাই অনেকেই আইনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার অপব্যবহার করে থাকেন।
বোম্বে হাইকোর্টের (High Court) চাঞ্চল্যকর রায়
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের এক গৃহবধূর মৃত্যুর জন্য তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল মৃতার পরিবার। গৃহবধূর ওপর শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি নিষ্ঠুরতার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছিলেন মৃত গৃহবধূর পিতা। মহারাষ্ট্রের গৃহবধূর এই মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দোষী সাবস্ত করেছিল নিন্ম আদালত। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই এবার মৃতার স্বামী হাইকোর্টের (High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
এবার তাতেই নিম্ন আদালতের রায়কে খারিজ করে দিয়ে মৃতার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ি অন্যান্য সদস্যদের বেকসুর খালাস করে দিল বোম্বে হাইকোর্ট (High Court)।এক্ষেত্রে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ টিভি দেখতে না দেওয়া, মন্দিরে একা যেতে না দেওয়া কিংবা শতরঞ্চিতে ঘুমাতে না দেওয়া নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না। এমনটাই জানিয়েছে বোম্বে হাইকোর্টের (High Court) ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ।
আসলে গৃহবধূর মৃত্যুর পর তার পিতা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তুলেছিলেন। যেমন তাদের মেয়েকে টিভি দেখতে দেওয়া হত না, শতরঞ্চিতে শুতে দেওয়া হতো, প্রতিবেশীদের সাথেও মিশতে দেওয়া হতো না, একা মন্দিরে যেতে দেওয়া হতো না। এছাড়াও নাকি তার রান্না নিয়েও অনেক সময় বিভিন্ন খোঁটা দেওয়া হতো।
আরও পড়ুন: লাগাতার ধর্ষণ আর হাতবদলের পর নির্যাতিতার মেয়ের বাবা কে? জানতে ৪ অভিযুক্তের DNA টেস্ট
এমনকি মাঝরাতে তাকে জল তুলতে বাধ্য করা হতো। অভিযোগ এমনই একদিন রাতে জল তুলতে গিয়েই নাকি গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল। এই মামলা আদালতে পর্যন্ত গড়াতেই মৃতার শ্বশুরবাড়ি এলাকার প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন বিচারপতি। তারপরেই জানা যায় ওই এলাকায় নাকি সবাই জল সরবরাহ করতেন মাঝরাতের পরেই।
তাছাড়া মাঝরাতে জল তোলার অভিযোগ বাদে বাকি যে সমস্ত অভিযোগের কথা বলা হয়েছে তার কোনটাই মৃতার ওপর মানসিক কিংবা শারীরিক নিষ্ঠুরতা নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট। তাছাড়া ওই গৃহবধূকে ঠিক কোন বিষয়ে খোঁটা দেওয়া হতো সেটিও স্পষ্ট নয়। আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিশতে না দেওয়ার বিষয়টিকে কখনওই নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে ফেলা যায় না। এছাড়া ওই মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনের পাশাপাশি তাঁর মাও জানিয়েছেন যে গৃহবধূ কখনোই নিষ্ঠুরতা শিকার হওয়ার কথা তাদের নিজে থেকে জানাননি। তাই শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের পাশাপাশি মৃতার স্বামীকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে।