বাংলা হান্ট ডেস্ক: বঙ্গের রাজনীতিতে কার্যত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বগটুই “হত্যাকান্ড”। ইতিমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার বগটুইর ঘটনাস্থলে গিয়ে এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মত গ্রেফতারও করা হয় আনারুলকে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় এসডিপিও ও আইসি-র গাফিলতি ছিল বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে এবার, বগটুই “হত্যাকাণ্ডে” সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আর এতেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, প্রত্যক্ষভাবে এই তদন্তে চাপের মুখে পড়তে চলেছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী তৃণমূলের নেতা অনুব্রত মন্ডল। এমনিতেই গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে আছেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত। তবে, এবার বগটুই “হত্যাকাণ্ডে” তিনি যে বেশ বিপদে পড়তে চলেছেন তা মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাশাপাশি, বিরোধীরা মনে করছে যে, সরকার চেয়েছিল নীচুস্তরের কর্মীদেরকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আসল “মাথা”গুলিকে আড়াল করে ফেলতে। কিন্তু এমতাবস্থায়, হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার নেওয়ায় বিরোধীরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। পাশাপাশি, এই ঘটনার জের কেবল নীচুতলার ক্ষেত্রেই নয়, বরং শাসকদলের বেশ ওপর পর্যন্ত এটি ছড়িয়ে রয়েছে বলে মত বিরোধীদের।
এদিকে, বীরভূমে তৃণমূল মানেই কার্যত সেখানে “কেষ্ট”র কথাই শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হয়। যে কারণে অনুব্রত মণ্ডলকে বিরোধীদের অনেকেই কটাক্ষ করে বীরভূম জেলার “ছোটো মুখ্যমন্ত্রী” বলেও অভিহিত করেন। এমতাবস্থায়, ব্লক সভাপতি গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন উঠেছে যে, গণহত্যার আগাম আঁচ আনারুলদের কাছে থাকলেও বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে সেই আভাস কি আদৌ ছিলনা?
এদিকে, এরই মাঝে গণ ত্যা ঘটে যাওয়ার পর দিন সকালে অনুব্রত মন্ডল দাবি করেছিলেন যে, ওখানে শর্ট সার্কিট হয়েছে। আর এখানেই তৈরি হয়েছে রহস্য! অনুব্রত আসল ঘটনা জেনেও তা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি না তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিরোধীরা জানিয়েছেন যে, কান টানলেই মাথা আসে। অর্থাৎ, তদন্ত শুরু হলে অনুব্রত মন্ডলদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখতে পারে সিবিআই।
তবে, বিরোধীরা এর আগেও অভিযোগ করছিলেন যে, একাধিক ঘটনায় বারবারই প্রশাসন ও আইনের খাঁড়া নেমে এসেছে নীচু তলার কর্মীদের ওপর। কিন্তু, ঘটনাগুলিতে জেলা নেতৃত্বের ভূমিকাও রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আর ওই কারণেই এখন “টার্গেট”-এ রয়েছেন কেষ্ট। মূলত সিটের কাছে আনারুল কী জবানবন্দি দেন তার ভিত্তিতে এবং সমগ্র পরিস্থিতি বিবেচনার পর অনুব্রত মণ্ডলকে ডেকে পাঠাতে পারে সিবিআই। এক কথায়, সিবিআই তদন্তভার নেওয়া মাত্র তৃণমূলের বীরভূম জেলার শীর্ষ নেতৃত্বরা কার্যত প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন।