বাংলাহান্ট ডেস্ক : অবশেষে কর্ণাটক হিজাব মামলায় রায় দিল হাইকোর্ট। কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্থি সাফ জানালেন শিক্ষাক্ষেত্রে ধর্মীয় পোষাক পরা নিয়ে কোনও মতভেদ নেই, কিন্তু যেহেতু শিক্ষাক্ষেত্রে ইউনিফর্ম নির্ধারিত আছে, সেহেতু প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর তা মেনে চলা উচিত।
আগেই কর্নাটক সরকারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে হিজাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়। মঙ্গলবার, কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্থি, বিচারপতি জে এম খাজি ও বিচারপতি কৃষ্ণ এম দীক্ষিতের বেঞ্চে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ নাভাদগি বলেন, ‘সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারায় হিজাব পরায় যে ছাড় দেওয়া হয়েছে তাই নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে ১৯ নম্বর এর ২ ধারায়। আইন অনুযায়ী এই নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতেই পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’
অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, ‘কর্ণাটকের শিক্ষা আইনের প্রস্তাবনায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। স্কুল ড্রেস যুক্তিযুক্ত হওয়া উচিত। হিজাব পরে ক্যাম্পাসে আসতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু ক্লাসরুমে ক্লাস চলাকালীন হিজাব একেবারেই নিষিদ্ধ।’ এই প্রসঙ্গে ফ্রান্সে প্রকাশ্যে হিজাব নিষিদ্ধ করার কথাও বলেন তিনি।
এরপরই প্রধান বিচারপতি জানান, ‘বিষয়টি পরিস্কার। কোনও শিক্ষাক্ষেত্রে যদি ইউনিফর্ম নির্ধারিত থাকে তাহলে তা মেনে চলতেই হবে। সেটা ডিগ্রি কলেজ হোক বা পিইউ’।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই হিজাব পরার বিষয়টি শুরু হয়েছিল ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া নামক একটি সংগঠন দ্বারা। এই সংগঠনের সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলিতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে জোর করেন হিজাব পরতে অনুমতি দেওয়ার জন্য।
প্রসঙ্গত, এই সংগঠনটির কড়া নিন্দা করেন বিচারপতি নাগানন্দ। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া হিজাব পরা নিয়ে দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করছে। এটি কোনও শিক্ষামূলক সংগঠন বা ছাত্রদের সংগঠন নয়। এটি এমন একটি সংগঠন যেটি শুধুও তোলপাড় এবং গন্ডগোল সৃষ্টি করছে’।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে কর্ণাটকের উদিপিতে হিজাব পরে আসায় এক ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে বাধা দেয় কয়েকজন ছাত্র। এরপরই হিজাব নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। চলে একাধিক বিক্ষোভ, অবরোধ। বিতর্কের জল গড়ায় আদালত অবধি। এবার সেই মামলারই রায় দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট।