বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমানে বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ক্রমাগত টার্গেট করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, হিন্দুরা রীতিমতো ভয়ের মধ্যে রয়েছেন। দেশের ৪৮ টি জেলার ২৭৮ টি স্থানে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, মৌলবাদীরা হিন্দুদের সম্পত্তিরও ক্ষতি করছে। এখন সংখ্যালঘু শিক্ষকদেরও জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হচ্ছে।
৪৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার পদত্যাগ: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি অনেকটাই খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৪৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সেখানকার পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে উঠছে।
মহিলাদের ওপর হামলা, মন্দিরে হচ্ছে ভাঙচুর: বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ (Bangladesh) ছাত্র ঐক্য পরিষদ যা বলেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক সজিব সরকার এই কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুরা হিংসাত্মক বাতাবরণের সম্মুখীন হয়েছে।
শিক্ষকরা পদত্যাগ করেছেন: তিনি বলেন, এর মধ্যে লুটপাঠ থেকে শুরু করে নারীদের ওপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর, বাড়ি-ঘর ও কর্মক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগ, এমনকি খুনের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। সরকার আরও প্রকাশ করেছেন যে, সারা দেশে (Bangladesh) সংখ্যালঘু শিক্ষকরা শারীরিক আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছেন। এমতাবস্থায়, গত ৩০ অগাস্ট পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৯ জন শিক্ষক- শিক্ষিকাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে ১৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
“আমি পদত্যাগ করছি”: সম্প্রতি বরিশালের বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষা শুক্লা রানি হালদারের বিষয়টি সামনে এসেছে। “ইন্ডিয়া টুডে”-র রিপোর্ট অনুসারে, গত ২৯ অগাস্ট ছাত্র এবং বহিরাগতদের একটি ভিড় তাঁর অফিসে হামলা চালায় এবং পদত্যাগ দাবি করতে শুরু করে। এর জেরে পদত্যাগ করতে হয় শুক্লা রানিকে। একটি ফাঁকা কাগজে তাঁর লেখা “আমি পদত্যাগ করছি” চিঠিটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাত্র ১ ম্যাচেই অবস্থা খারাপ সূর্যকুমার যাদবের! দল থেকেও পড়তে পারেন বাদ, কি হল তারকা প্লেয়ারের?
৪৮ টি জেলায় ২৭৮ টি স্থানে হিন্দু পরিবারের ওপর হিংসাত্মক ঘটনা এবং ভাঙচুর: শেখ হাসিনার ঢাকা ত্যাগের পর দেশে অশান্তি ছড়িয়েছে এবং হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরকে টার্গেট করা হচ্ছে। দেশের ২৩ টি ধর্মীয় সংগঠনের একটি জাতীয় জোট বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট (বিজেএইচএম) বলেছে, গত ৫ অগাস্ট থেকে দেশের ৪৮ টি জেলার ২৭৮টি স্থানে হিন্দু পরিবারগুলি হিংসাত্মক আন্দোলন ও বর্বরতার সম্মুখীন হয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন মাসের শুরুতেই বড় ঝটকা! ফের বাড়ল LPG সিলিন্ডারের দাম, টান পড়বে পকেটে
উল্লেখ্য যে, কোটা বিরোধী হিংসাত্মক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর গত মাসে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তারপর বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস শপথ গ্রহণের পর বলেছিলেন, তিনি সংবিধানের মর্যাদা বজায় রাখবেন এবং জনগণকে সমর্থন ও সুরক্ষা দেবেন। পাশাপাশি, সততার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন।