বাংলা হান্ট ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে একাধিক বার উঠে এসেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিনহার নাম। এমনকি, হাইকোর্টেও কার্যত তুলোধনা করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই স্কুল সার্ভিসে একাধিক নিয়োগ মামলার তদন্তে তাঁকে বারংবার সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ক্রমশ শান্তিপ্রসাদের নাম উঠেছে। এমতাবস্থায়, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাঁর নামে অভিযোগের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, শান্তিপ্রসাদকে জেরা করে বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি, বারবার বয়ান পাল্টেছেন তিনি। যার ফলে উপদেষ্টা কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে অনেক ব্যাপারে তাঁর কথার মিল থাকছেনা।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে কে এই শান্তিপ্রসাদ সিনহা?
জানা গিয়েছে, প্রথমে যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজে পড়াতেন শান্তিপ্রসাদ। কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে যে, তাঁর স্কুল সার্ভিসের কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান পদে আসার ক্ষেত্রে মানিক ভট্টাচার্যের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। মূলত, যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী কলেজের প্রিন্সিপাল হয়েছিলেন মানিক। এমনকি, তৃণমূল সরকার আসার পরে প্রাইমারি শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি হয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। এছাড়াও, তিনি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন বলে পরিচিত ছিলেন।
এমতাবস্থায়, একাধিক রাজনৈতিক সূত্রের দাবি অনুযায়ী জানা গিয়েছে, মানিক ভট্টাচার্যের সুপারিশের ভিত্তিতেই শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে স্কুল সার্ভিসের কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও, এই দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে মানিক জানিয়েছেন, “শান্তিপ্রসাদ সিনহাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার কোনো ভূমিকা নেই। আমি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দায়িত্বে ছিলাম। ওটা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিষয়।”
এদিকে, একাধিক দুর্নীতির মামলায় নাম উঠেছে শান্তিগোপালের। ইতিমধ্যেই নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলাতে সম্প্রতি তাঁকে কাঠগড়ায় তুলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও এক ব্যক্তির চাকরি হওয়ায় এই মামলা হয়েছিল। পরে গ্রুপ-ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ওই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও, শান্তিপ্রসাদ সিবিআইয়ের জেরা এড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
শুক্রবারও শান্তিপ্রসাদকে জেরা করেছে সিবিআই। যদিও এইবার গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জেরা করা হয়নি। নবম ও দশম শ্রেণিতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলাতেও নাম জড়িয়ে রয়েছে শান্তিপ্রসাদের।