বাংলা হান্ট ডেস্ক : এমনিতে রাস্তার নাম গৌরী শঙ্কর লেন, তবে সারা দুনিয়ার কাছে এই জায়গা পরিচিত ‘সোনাগাছি’ (Sonagachi) হিসেবে। এই নামটুকুই যথেষ্ট এলাকার সাইন বোর্ড হিসেবে। উত্তর কলকাতার সাবেক দর্জি পাড়াতে থরে থরে সাজানো শয্যায় মর্জিনারা খদ্দেরদের মন জুগিয়ে চলেন। গুগল, ইন্টারনেটও জানিয়ে দেয় যে, যৌনতার এই বাজারই এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ‘রেড লাইট ডিস্ট্রিক্ট’। তবে কখনও ভেবে দেখেছেন কি যে, এই ভূ-খণ্ডের নাম ‘সোনাগাছি’ কেন?
উল্লেখ্য, সোনাগাছি কেবল ভারতেরই সবচেয়ে বৃহৎ পতিতালয় নয়, এই পতিতাপল্লীর পরিচিতি গোটা এশিয়ায়। কথিত আছে প্যারিসের বিখ্যাত যৌনকর্মীরাও কলকাতার এই সোনালি অঞ্চল (Golden district)-এর খ্যাতি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। আর হবে নাই বা কেন, কলকাতার এই নিষিদ্ধপল্লীর কয়েকশত বহুতল ভবনে লক্ষাধিক যৌনকর্মীর বসবাস। যেখানে যৌনতার আসর বসে রোজই।
প্রথমেই বলি, ‘সোনাগাছি’ উত্তর কলকাতার মার্বেল প্যালেসের উত্তরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, শোভাবাজার ও বিডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলের নিকটে অবস্থিত। ইতিহাসবিদ পিটি নায়ের তার বইয়ে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে গেছেন। কথিত আছে, এই এলাকার অধিপতি ছিলেন সানাউল্লাহ গাজী বা সোনা গাজি নামক এক মুসলিম ডাকু। প্রায় ৩০০ বছর আগে নিজের মা-কে নিয়ে এখানে থাকত সে।
কথিত আছে, এই ডাকুর মৃত্যুর পর তার ঝুপড়ি থেকে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেতেন তার মা। মা নাকি ছেলের কান্না শুনেছিলেন। সানাউল্লাহ নাকি বলেছিলেন, ‘মা তুমি কেঁদোনা। আমি এখন গাজি হয়ে গেছি।’ এরপরেই তার মা তার সমাধিস্থলে একটি সুন্দর মসজিদ তৈরি করেন। এবং সেই মসজিদের নাম দেন ‘সোনা গাজি’।
উল্লেখ্য, এই ডাকু সোনা গাজির সমাধির উপর তৈরি মাজার এখনও রয়েছে ওই এলাকায়। তবে শোনা যায় তা নাকি এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত। যেহেতু এই ডাকাত ঐ এলাকার অধিপতি ছিলেন তাই ওই গোটা চত্বরটিকেই সোনা গাজির নামে ডাকা হত। তবে সময়ের সাথে সাথে সেই ‘সোনা গাজি’ নামই লোকমুখে ঘুরতে ঘুরতে ‘সোনাগাছি’-তে পরিণত হয়েছে। আর সেটাই বর্তমানে এশিয়ার সবচেয়ে বড় রেড লাইট এরিয়া।