বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা তিনি, এছাড়াও বিগত কয়েক দিন ধরে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে অন্যতম প্রধান মুখ হিসাবে উঠে আসছে তাঁরই নাম। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন এখানে কথা হচ্ছে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) নিয়েই। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ধরনের চর্চিত বিষয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে আসেন তিনি।
কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা নিয়েও রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখ শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর ঐ প্রতিবাদের জেরে বাংলাদেশের অন্যতম মৌলবাদী শক্তি নাকি তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার ছক কষছে।
আরও বাড়ছে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)নিরাপত্তা
এই খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছেন অমিত শাহের অধীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জানা যাচ্ছে, আছে চলতি সপ্তাহেই অমিতের মন্ত্রকের তরফ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ওপর হামলার কথা জানানো হয়েছে বিরোধী দলনেতার দপ্তরকে। পাশাপাশি বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তরেরকেও। নবান্ন সূত্রে খবর বিরোধী দলনেতার উপর হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এখানে বলে রাখা ভালো মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে রাজ্যের পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ক্ষমতা। তাই শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) প্রাণ নাশের আশঙ্কার খবর মিলতেই এবার রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে শুভেন্দু অধিকারী নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এমনিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের জেড প্লাস পর্যায়ের নিরাপত্তা পান শুভেন্দু। কিন্তু বর্তমানে তার ওপর তাঁর প্রাণহানির হামলা হওয়ার কথা জানাজানি হতেই তাঁর সেই নিরাপত্তায় বদল আনা হচ্ছে বলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রের খবর। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর নতুন নিরাপত্তা অনুযায়ী বিরোধী দলনেতার কনভয়ের জন্য মোতায়েন থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর মোট ২২ জন। এমনকি বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তার প্রয়োজনে মহিলা নিরাপত্তারক্ষী ব্যবহার করার কথাও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
এছাড়া রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় বিরোধী দলনেতার কর্মসূচিতে গেলে তাঁকে বুলেট নিরোধক গাড়ি দেওয়াও হতে পারে বলেই খবর। এখানেই শেষ নয়, জানা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাজ্যের বেশ কিছু স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, তার জন্য রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ বার থেকে বিরোধী দলনেতা রাজ্যের যেখানেই কর্মসূচিতে যাবেন, সেখানকার স্থানীয় তথ্য রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে জানবে শাহের মন্ত্রক। অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রয়োজন হলে তা মোতায়েন করবে রাজ্য পুলিশ। নবান্নের একটি সূত্রের বক্তব্য, এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: ২ জন পড়ুয়ার জন্য হিসাব দেখানো হচ্ছে ৪৭ জনের! বাংলায় মিড ডে মিলে বিরাট কারচুপি ‘ফাঁস’
সময়ের সাথে সাথে শুভেন্দু অধিকারীর জনপ্রিয়তাও ব্যাপক বেড়েছে। তাই তাঁর জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষীরা, বিনা বাধায় তাঁর ছবি তুলতেও দিয়ে থাকেন। কিন্তু এই নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর কেউ আর চাইলেই বিরোধী দলনেতার সঙ্গে ছবি তুলতে পারবেন না। এক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে বেশ কিছু প্রোটোকল। তার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর সাথে ছবি তুলতে চাইলে আগে থেকে ওই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তল্লাশি করে দেখবেন তার দেহরক্ষীরা। তারপরেই শুভেন্দু অধিকারীর সাথে ছবি তোলার অনুমতি পাওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে বিরোধী দলনেতার সুরক্ষা তথা নিরাপত্তা দিতে যা যা সহযোগিতা তারা চাইবেন তা রাজ্য দেবে।
প্রসঙ্গত বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন তার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতার ওপর বাংলাদেশী মৌলবাদীদের হামলা চালালে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর তার ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সম্ভবত এই কারণেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাইছে নবান্ন। যদিও এ বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন নন্দীগ্রামে আন্দোলনের সময়ও তার ওপরে হামলা হয়েছিল। বিগত কয়েক বছর ধরে তার ওপর আরও অনেক হামলা হয়েছে। কিন্তু তিনি সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া ছাড়েননি। কারণ শুভেন্দু অধিকারীর কথায় তিনি মানুষের জন্য রাজনীতি করেন। তাই কে কি হামলার ছক কষছে তা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই।