বাংলা হান্ট ডেস্ক: সোমবার নেপালের (Nepal) কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য এলাকায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর নেপাল সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। রয়টার্সের এক রিপোর্ট অনুসারে, দেশজুড়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসনের মতে, “হামি নেপাল” পূর্ব অনুমতি নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। এদিকে, সোমবারের এই বিক্ষোভের পর নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগের ঘোষণা করেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকেই তিনি পদত্যাগ করেন বলে জানাঙ্গিয়েছে। এমতাবস্থায়, সংবাদ সংস্থা ANI সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে ভারত-নেপাল সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সশস্ত্র সীমা বল (SSB) সতর্কতা বৃদ্ধি করেছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে কিছু জায়গায় যৌথ টহল দেওয়া হচ্ছে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি নেপালে (Nepal):
নেপালের সংলগ্ন ভারতের কোন কোন রাজ্য: জানিয়ে রাখি যে, ভারত-নেপাল (Nepal) সীমান্ত উন্মুক্ত। তবে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ থেকে শুরু করে, বিহার, উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই ৫ টি রাজ্য নেপালের সাথে সীমান্ত ভাগ করে নেয়। যেখানে অনেক ছোট-বড় বর্ডার পয়েন্ট রয়েছে। উত্তর প্রদেশের পিলিভিট, বাহরাইচ, সিদ্ধার্থনগর এবং মহারাজগঞ্জে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। ড্রোন এবং প্রযুক্তির সাহায্যে সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এদিকে, বিহারের চম্পারণ, সীতামারী এবং মধুবনিতেও নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে।নেপাল সরকার বারদিয়া এবং ধানুশার মতো জেলাগুলিতেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে।
#WATCH | Kathmandu, Nepal: A protestor says, “We are here to protest against the corruption and the ban of social media. There are people dying on the streets. I have seen more than 15 people being shot. There is not enough ambulances, and the hospitals are running out of… https://t.co/jLA7fEJlq8 pic.twitter.com/OiTxzVeeUr
— ANI (@ANI) September 8, 2025
নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে হিংসাত্মক সংঘর্ষ: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সোমবার সকালে, কাঠমান্ডুর বিক্ষোভকারীরা নিউ বানেশ্বরে সংসদ ঘিরে ফেলে এবং ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেই সময়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেয়। কাঠমান্ডু পোস্ট অনুসারে, বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির শহর দামকে (Nepal) তাঁর পৈতৃক বাড়িতে পাথর ছুঁড়ে মারে। যার ফলে পুলিশ সতর্কীকরণ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের প্রতিবাদের পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আওয়াজ তোলে। একাধিক রিপোর্টে এই প্রতিবাদকে Gen Z-এর প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে।
নেপালে বিক্ষোভের অবস্থা: উল্লেখ্য যে, এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবের মতো ২৬ টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীরা তাঁদের আওয়াজ তুলেছেন। নিউ বানেশ্বরে সংসদ ভবন ঘেরাও করার সময়, তাঁরা কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে দাঙ্গা-বিরোধী পুলিশকে পিছু হটতে বাধ্য করে। এর ফলে পুলিশ কাঁদানে দেশ এবং জলকামান নিক্ষেপ করে এবং কারফিউ জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: একলাফে দ্বিগুণ হবে বাণিজ্য! অক্টোবরেই এই দেশের সঙ্গে ট্রেড ডিলের সম্ভাবনা ভারতের
কারফিউ এবং বিধিনিষেধ: কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন সংসদ ভবন থেকে শুরু করে সরকারি সচিবালয়, রাষ্ট্রপতি ভবন এবং অন্যান্য উচ্চ-নিরাপত্তা এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া, ইটাহারি এবং দামক-এও কারফিউ জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে বয়কট করা সম্ভব নয় কেন? অবশেষে কারণ জানাল BCCI
নেতৃত্ব দেয় “হামি নেপাল”: কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসনের মতে, “হামি নেপাল” পূর্ব অনুমতি নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল। আয়োজকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় রুট এবং নিরাপত্তা টিপস শেয়ার করেছিলেন। হামি নেপালের সভাপতি সুধন গুরুং জানান যে এই প্রতিবাদ সরকারি কর্মকাণ্ড এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছে এবং সারা দেশে (Nepal) এই ধরণের বিক্ষোভ চলছে।