বাংলাহান্ট ডেস্ক: ১১ বছরেই আমূল পরিবর্তন ভারতের (India)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) আগামীকাল অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ তাঁর ৭৫তম জন্মদিন পালন করবেন। ২০১৪ সালে যখন তিনি প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৬৪ বছর। গত ১১ বছরে তিনি কেবলমাত্র তাঁর রাজনৈতিক দল বিজেপিকেই শীর্ষে পৌঁছে দেননি, বরং ভারতের অর্থনৈতিক গতি ও দিশা সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে আজ ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। জিডিপি, পরিকাঠামো এবং প্রতিরক্ষা খাতে দেশ একের পর এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
১১ বছরে উন্নতির শিখরে ভারত (India)
মোদীর নেতৃত্বে ২০১৪ সালে যে দেশ প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জায়গায় ছিল এবং বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে নবম-দশম স্থানে ঘোরাফেরা করছিল, সেই দেশ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪.১৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পৌঁছেছে। গত ১১ বছরে এটি প্রায় ১০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৪ শতাংশে, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও ভারতের (India) শক্তিশালী আর্থিক অবস্থান প্রমাণ করছে।
আরও পড়ুন:ATM-এ আর নয় দীর্ঘ লাইন! এবার মোবাইলের মাধ্যমেই তোলা যাবে টাকা, কবে শুরু পরিষেবা?
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কিংবা ইজরায়েল-হামাস সংঘাতের মতো সংকটময় সময়ে যেখানে বহু দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল, সেখানে ভারত (India) নিজের গতি ধরে রাখতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নীতির প্রভাব থেকেও দেশ তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থেকেছে।
অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে মোদী সরকারের প্রধান পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি-র বাস্তবায়ন, মেক ইন ইন্ডিয়া (India) ও ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মতো প্রকল্প, এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বছরে আনুমানিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ। রেলপথ, মহাসড়ক এবং বিমানবন্দরের উন্নয়ন দেশীয় অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত করেছে। রপ্তানির ক্ষেত্রেও সাফল্য এসেছে, বিশেষত প্রতিরক্ষা রপ্তানি রেকর্ড ছুঁয়েছে—২৩,৬২২ কোটি টাকা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৫২ কোটি ঋণ খোলা হয়েছে এবং ৩২.৬১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এই উদ্যোগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ছিল একটি বড় প্রাপ্তি।
ভারতের (India) অর্থনৈতিক উত্থানের পাশাপাশি সামাজিক ক্ষেত্রে যেমন স্বচ্ছ ভারত অভিযান, নারী ক্ষমতায়ন, কৃষক কল্যাণ কর্মসূচি ইত্যাদি নীতি সমানভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এগুলি সমন্বিত উন্নয়নের ভিত্তি গড়তে সাহায্য করেছে।
আরও পড়ুন:চিকিৎসার জন্য ভারতে এসে এখানেই জাঁকিয়ে বসেছিলেন, ৩৮ জন অবৈধ বাংলাদেশিদের তালিকা গেল নির্বাচন কমিশনে
ভবিষ্যতের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ভারত (India) ২০২৯ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে, যেখানে দেশের জিডিপি পৌঁছে যাবে ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যদিও সামনে চ্যালেঞ্জ রয়ে গিয়েছে—আয় বৈষম্য এবং কর্মসংস্থানের প্রসার এখনো সমাধানযোগ্য বিষয়। তবে মোদী সরকারের নীতিগুলি দেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে সুদৃঢ় করছে।
৭৫ বছরে পদার্পণ করতে চলা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আজ ভারত (India) কেবল অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবেই নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতির মঞ্চেও নতুন পরিচিতি গড়ে তুলছে। তাঁর জন্মদিনে দেশবাসী একদিকে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাবে, অন্যদিকে গত ১১ বছরের আর্থিক ও সামাজিক সাফল্যের সাক্ষীও থাকবে।