কিভাবে করবেন ছট পুজো? পুজো প্রচলনের কাহিনীর সঙ্গে জেনে নিন রীতিনীতি

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হিন্দু তথা উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের কাছে ছট পুজো (Chhath puja) হল একটি বিশেষ উৎসব যা কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে উদযাপিত হয়। বিশেষত বিহার, ঝাড়খন্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের তরাই অঞ্চলে এই উৎসবের জৌলুস বর্তমান।

এই পুজো সূর্য্য ও তাঁর পত্নী উষার উদ্দেশ্যে সম্পন্ন করা হয়। পৃথিবীতে জীবনের স্রোত বহাল রাখতে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও আশীর্বাদ প্রদানের কামনায় এই ছট পুজো (Chhath puja) করা হয়। এই পুজোতে কোন মূর্তি পুজো করা হয় না।

chat puja 5

ছট পুজোর সঙ্গে মিল আছে এমন উৎসবের ব্যাখ্যা পুরাণে পাওয়া গেলেও  ঋগ্বেদের শ্লোকে সূর্য্যবন্দনার প্রমাণ পাওয়া যায়। ভারতীয় সভ্যতার পাশাপাশি রোমান, গ্রিক, মিশরীয় সভ্যতার মুখ্যদেবতা ছিলেন সূর্য্য দেব। তৎকালীন সময়ে পূর্বের দেবী উষা অশ্বিনীকুমারদের মাতা ছিলেন। মনে করা হয়, তাঁর ভগিনী হলেন রাত্রি, যাকে পুরাণে সন্ধ্যা বা ছায়া রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। রামায়ণ বা মহাভারতেও সূর্য বন্দনার কথা বলা হয়েছে।

RTRIPLV

পুরাণ অনুযায়ী জানা যায়, প্রথম মনু- প্রিয়বত নিঃসন্তান থাকায় তাঁর পিতা কাশ্যপ মুনির পরামর্শে তিনি পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞ করনে। কিন্তু যজ্ঞের ফল স্বরূপ তাঁর স্ত্রী একটি মৃত পুত্রের জন্ম দেওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েন। এমন সময় আকাশ থেকে এক দিব্য কন্যা প্রকট হয়ে, ব্রহ্মার মানস কন্যা রূপে নিজের পরিচয় দেয়। তিনি মৃতু পুত্রকে স্পর্শ করতেই সে বেঁচে যায়। শোনা যায়, এই ঘটনার পর থেকেই উষা দেবী না ছটি মায়ের পুজোর প্রচলন শুরু হয়।

কথিত আছে, চারদিনের এই ব্রতের প্রথম দিন ব্রত পালনকারীরা স্নান সেরে শুদ্ধাচারে পরিস্কার ভাবে নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন। তারপর দিন থেকে পুজোর জন্য উপোষ করতে হয়। যিনি উপোষ থাকেন তিনি সারাদিন নির্জলা উপবাস করেন। তারপর সন্ধ্যায় পুজো সম্পন্ন হলে ক্ষীরের ভোগ গ্রহণ করেন। পুজো সম্পন্ন হলে তৃতীয় দিন নিকটবর্তী জলাশয়ে গিয়ে অস্তগামী সূর্যকে দুধ অর্পণ করতে হয়।

chhat puja

এই পুজোর ব্রতপালনের শেষ দিনে আবারও সেই জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য দান করা হয়। এরপর প্রসাদ হিসাবে সকলকে ক্ষীর, ঠেকুয়া, ভাতের নাড়ু, সুপ, গুড়, মিষ্টান্ন, আখ, কলা, মিষ্টি লেবু দেওয়া হয়।


Smita Hari

সম্পর্কিত খবর