বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সংসারে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর আসন কখনই উচ্চ নয়। স্বামী-স্ত্রী (Husband-Wife) দুজনেই সমান মর্যাদার অধিকারী। স্বামীর ভূমিকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। স্ত্রীর ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। স্বামী-স্ত্রীর মিলিত প্রচেষ্টাতেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সম্ভব। বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পর্কিত একটি মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। দু’জন মানুষের যৌথ উদ্যোগ ও সম প্রচেষ্টায় সংসার সুখের হয়। সম্প্রতি এক মামলায় এমনটাই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের।
স্বামী এবং স্ত্রী দু’জনেই কলকাতা হাইকোর্টে পৃথক মামলা দায়ের করেছিলেন করেছিলেন। তবে স্বামীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন স্ত্রী। তার আবেদন গৃহীত হয়েছে। সাংসারিক সমস্যার সমাধান চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক যুবক। ওদিকে স্বামীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে আদালতে যান স্ত্রী।
ওই যুবকের অভিযোগ ছিল, দাম্পত্য কলহ, হেনস্থা সহ শারীরিকভাবে তাকে ও তার বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করেন তার স্ত্রী। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগও তোলেন তিনি। ওদিকে স্ত্রীর অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে তাকে যোগ্য সন্মান দেওয়া হয়না। পাশাপাশি, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মানসিক ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তিনি।
বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা শুনানির জন্য উঠলে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সংসারে স্বামী বা স্ত্রী, কেউই অবহেলার পাত্র নন। স্বামীকে স্ত্রীর চেয়েও উচ্চ আসনে বসিয়ে রাখা কখনই উচিৎ নয়। সুখী পরিবার ও দাম্পত্যের স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সমান ভূমিকা।”
আরও পড়ুন: গরু পাচারকারীদের হামলার মুখে BSF! বুলেটের আঘাতে ভয়ঙ্কর ঘটনা কোচবিহারে!
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “অনুকূল সাংসারিক পরিবেশ গড়ে তুলতে স্বামী ও স্ত্রী দুজনের ভূমিকা হবে একে অন্যের পরিপূরক। সমাজের প্রাচীন রীতি মেনে স্বামীকে স্ত্রীর চেয়ে উঁচু আসনে বসিয়ে রাখা হত। তবে সময়ের সাথে তা বিলোপ পেয়েছে। ভারতীয় সংবিধানেও লিঙ্গসাম্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই সংসারে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীকে উঁচু আসনে বসিয়ে রাখা অনুচিত।” বৈবাহিক সম্পর্কের দ্বন্দ্ব নিজেদের মধ্যেই মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ হাই কোর্টের।