বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রায়শই আমরা এমন কিছু স্থান সম্পর্কে জানতে পারি যেগুলি সম্পর্কে অবাক করা সব তথ্য যুগের পর যুগ ধরে প্রচারিত হতে থাকে। মূলত, ওই স্থানগুলি সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত বিশ্বাস প্রচলিত থাকে। যেগুলি রীতিমতো অবাক করে দেয় সবাইকেই। বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক সেইরকমই এক প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। মূলত, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) জালাউনে বছরের পর বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট স্থান সম্পর্কে এমনই একটি বিশ্বাস বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই স্থানটি লঙ্কা মিনার (Lanka Minar) নামে পরিচিত। যেটি রাবণকে উৎসর্গ করা হয়েছে। কথিত আছে, দিল্লির কুতুব মিনারের পর এটিই সবচেয়ে উঁচু মিনার। যিনি এটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি রামলীলায় রাবণের ভূমিকায় অভিনয় করতেন। শুধু তাই নয়, তিনি রাবণের এতটাই অনুরাগী ছিলেন যে, লঙ্কার নামেই ওই মিনারটি তৈরি করেছিলেন। এদিকে কথিত আছে, ভাইবোন একসঙ্গে এই মিনারে উঠতে পারে না। চলুন জেনে নেই সেই বিষয়টি সম্পর্কে।
উত্তর প্রদেশের জালাউন জেলার বুন্দেলখণ্ডের কাল্পির প্রবেশদ্বারে অবস্থিত এই মিনারের ভেতরে রাবণের পরিবারের ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই মিনারটি খুব বড় না হলেও অদ্ভুত বিশ্বাসের কারণে এই স্থানটি একটি পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। এমনকি, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই জায়গাটি দেখতে।
আরও পড়ুন: বড় খবর! এবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ইস্তফা দিলেন নীতা আম্বানি! পরিবর্তে এলেন কারা?
১৮৫৭ সালে নির্মাণ করা হয়: লঙ্কা মিনার নির্মাণের কাহিটি অত্যন্ত চমকপ্রদ। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এই মিনারটি ১৯৫৭ সালে মথুরা প্রসাদ নামে এক ব্যক্তি নির্মাণ করেছিলেন। মথুরা প্রসাদ রাবণের স্মৃতিতে নির্মিত এই মিনারটি নির্মাণ করেন। তাই এর নামকরণ করা হয় “লঙ্কা মিনার”। এটি তৈরি করতে ২০ বছর সময় লেগেছিল। পাশাপাশি, লঙ্কা মিনারের উচ্চতা হল ২১০ ফুট। তৎকালীন সময়ে এই মিনারটি নির্মাণে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বসে নেই ISRO! চন্দ্রযান-৩-এর পর এবার মহাকাশে যাবে মহিলা রোবট, কোন মাসে সম্পন্ন হবে ট্রায়াল?
মেঘনাদ ও কুম্ভকর্ণের বড় মূর্তি রয়েছে: জানিয়ে রাখি যে, লঙ্কা মিনারে কুম্ভকর্ণ ও মেঘনাদের বড় মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছে। কুম্ভকর্ণের মূর্তিটি প্রায় ১০০ ফুট এবং মেঘনাদের মূর্তিটি প্রায় ৬৫ ফুট লম্বা। পাশাপাশি, শিব ছাড়াও চিত্রগুপ্তের মূর্তিও রয়েছে। এছাড়াও, নাগ দেবতার ১৮০ ফুট উঁচু মূর্তিও এখানে স্থাপন করা হয়েছে। যেহেতু রাবণ শিবের ভক্ত ছিলেন, তাই শিব মন্দির থাকার এটিও একটি কারণ হতে পারে।
ভাইবোনেদের যাওয়া নিষেধ: লঙ্কা মিনারের প্রসঙ্গে একটি অদ্ভুত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। মূলত, ওই মিনারে ভাইবোনেরা একসাথে ওপরে উঠতে পারে না। আসলে মিনারের চূড়ায় যেতে হলে ৭ টি পরিক্রমণ করতে হয়। অর্থাৎ ৭ বার ঘুরতে হয়। যা ভাইবোনেরা পারে না। এই কারণেই ভাইবোনদের একসাথে টাওয়ারের ওপরে যেতে দেওয়া হয় না। স্থানীয় মানুষেরা বছরের পর বছর ধরে এটি অনুসরণ করে আসছে।