বাংলা হান্ট ডেস্ক : হিজাব বিতর্কের আঁচ এবার ছড়িয়ে পড়ল সংসদের ভিতরেও। মুসলিম মহিলারা হিজাব পরলে অসুবিধা কোথায়? এই প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় কেন্দ্র সরকারকে তোপ দাগলেন সিপিএম (CPIM) সাংসদরা।
কর্ণাটকের (Karnataka) একটি সরকারি কলেজে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গতবছর রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠেছিল সেরাজ্যের রাজনীতি। সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে পাত্তা না দিয়েই মুসলিম পড়ুয়ারা স্কুল-কলেজে হিজাব পরে ঢোকার চেষ্টা করতে থাকেন। শুরু হয় চরম শোরগোল। দানা বাঁধে বিতর্ক। রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন সংখ্যালঘুরা। পালটা রাস্তায় নামে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিও। বিক্ষোভ ভয়ংকর রূপ নেয়। কিন্তু তাতেও রাজ্য সরকার স্কুল-কলেজে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করেনি। আদালতে গিয়েও লাভ হয়নি হিজাব সমর্থনকারীদের।
এবার সেই প্রসঙ্গেই সংসদে তুলকালাম শুরু করে সিপিএম (CPIM) সাংসদরা। একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথকেও নিশানা করলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ জন ব্রিটাস। সংসদে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে তারা স্কুল কলেজে হিজাব পরার অনুমতি দিচ্ছে না। মেনে নিলাম। কিন্তু ভারতের মতো দেশ, যার সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) সবসময় গেরুয়া পোশাক পরে থাকেন, তখন কেন আপত্তি হয় না?’
সিপিএমের ওই সাংসদের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার হিজাব প্রসঙ্গে একগুঁয়েমি দেখানোর কারণে আসলে ক্ষতি হচ্ছে মুসলিম মহিলাদেরই। শুধুমাত্র কর্ণাটকেই এক লক্ষ মুসলিম পড়ুয়া স্কুল-কলেজ যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। সিপিএম সাংসদেরও আরও দাবি, মুসলিমদের শিক্ষা এবং সামাজিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া নিয়ে সাচার কমিটির রিপোর্ট কার্যকর করুক সরকার।
বিগত কয়েকমাসের মধ্যেই নজিরবিহীন বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছে কর্নাটক। বিজেপি শাসিত কর্নাটকের উদুপি জেলার দুটি সরকারি কলেজ ছাত্রীদের হিজাব পরে ক্লাসে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সাধারণত মুসলিম ধর্মাবলম্বী মহিলাদের মধ্য হিজাব পরার প্রচলন রয়েছে। ওই দুটি কলেজ হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা টানার পর থেকেই আরও বেশ কিছু সরকারি স্কুল কলেজ সহ কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ করা হিজাব। স্বাভাবিকভাবেই কলেজের তরফে এই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পর থেকে মুসলিম তরুণীরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়, অন্যদিকে হিজাবের নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করলে গেরুয়া উত্তরীয় পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে অনেক ছাত্রছাত্রী। হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির যুক্তি, স্কুল বা কলেজের একটি নির্দিষ্ট পোশাক রয়েছে, হিজাব তার অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে আসার অর্থ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৈরি নিয়মের বিরোধিতা করা।