বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষের (Israel–Hamas war) কারণে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি বর্তমানে খুবই উত্তেজক হয়ে রয়েছে। এদিকে, এই সংঘাতে ইরান ও ইজরায়েল মুখোমুখি হলেও আমেরিকা ও তার মিত্ররাও এই সংঘাতে সমানভাবে যুক্ত। ঠিক এই আবহেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চিনকে (China) হারাতে বড় পরিকল্পনা করেছে ভারত (India)। উল্লেখ্য যে, G20 বৈঠকে ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (India-Middle East-Europe Economic Corridor, IMECC) নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এখন এটির প্রসঙ্গে আরও কাজ শুরু হয়েছে।
IMEEC সম্পর্কিত প্রথম সিনিয়র অফিসার স্তরের বৈঠক ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (UAE)-র মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকটি আগামী ১৫ মে সম্পন্ন হবে। এমন পরিস্থিতিতে, আশা করা হচ্ছে যে IMEEC-র কাজ দ্রুত গতিতে পুনরায় শুরু হবে। যেটি ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধের কারণে ধীর হয়ে গিয়েছিল। এদিকে, এই করিডোর কিভাবে ভারতকে গ্লোবাল সাপ্লাই চেনে চিনের চেয়ে বেশি সুবিধা দেবে বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল। জানিয়ে রাখি যে, ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং আমেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের মধ্যে এই মাসের শেষের দিকে IMEEC-র প্রসঙ্গেই আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। একটি বৈঠকে যোগ দিতে চলতি মাসে ভারতে আসছেন সুলিভান।
চিনকে চ্যালেঞ্জ: এই বিষয়ে, UAE এবং মিশরে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নভদীপ সুরি New9 Plus Show-তে বলেছিলেন যে এই করিডোর ভারত, পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপকে সংযুক্ত করবে। এটির পূর্ব প্রান্ত ভারতের পশ্চিম উপকূল থেকে শুরু হবে, তারপর উপসাগরীয় দেশগুলিতে যাবে এবং সেখান থেকে একটি রেল নেটওয়ার্ক কন্টেনারগুলিকে ইজরায়েলের হাইফা বন্দরে নিয়ে যাবে। সেখান থেকে পণ্যগুলি জাহাজে ইউরোপে যাবে। যেটি গ্রিস থেকে ইউরোপে রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার মাধ্যমে শেষ হবে।
আরও পড়ুন: আজব কান্ড! ট্রেনের নাম বদলে হয়ে গেল “মার্ডার এক্সপ্রেস”, রেলের কীর্তিতে ফুঁসছে সবাই
নভদীপ সুরি বলেছেন যে, যদি এই পুরো করিডোরটির বিষয়ে দেখা যায় তবে এটি একটি ইন্টিগ্রেটেড প্রোজেক্ট। এছাড়াও, এটি একটি ডিজিটাল করিডোর। যার জন্য হাই স্পিড ডেটার প্রয়োজন হবে এবং এটি চিনকে চ্যালেঞ্জ করবে ও আমাদের সমস্ত দেশকে সংযুক্ত করবে। বর্তমানে, চিন সমুদ্রের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে। এই করিডোরের আরেকটি দিক হল সবুজ অর্থাৎ রিনুয়েবল এনার্জি গ্রিডের কানেক্টিভিটি। উল্লেখ্য যে, ভবিষ্যতের এনার্জি কানেক্টিভিটির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে কথা বলছে। অন্যদিকে সৌদি আরবের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারত নিজেই ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সে “ওয়ান ওয়ার্ল্ড, ওয়ান সান, ওয়ান গ্রিড”-এর প্রস্তাব করেছিল। যেখানে এর আরেকটি সুবিধা হবে গ্রিন হাইড্রোজেন কানেক্টিভিটির মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় দলের জন্য সুখবর! T20 বিশ্বকাপের আগেই চোট সারিয়ে প্রত্যাবর্তন এই দুই তারকা খেলোয়াড়ের
কিভাবে লাভবান হবে ভারত: উল্লেখ্য যে, নভদীপ সুরি এই প্রকল্পটিকে ভবিষ্যতের প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকেও এটি একটি ভালো প্রকল্প। এটি ভারতকে গ্লোবাল সাপ্লাই চেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে তুলবে। যেখানে সুয়েজ খালের ওপর নির্ভরতা কমবে। এটি ভারতের জন্য প্রয়োজনীয়। শুধু তাই নয়, এটি ভারতকে তার পণ্যের লজিস্টিক খরচ কমাতে সাহায্য করবে। জানিয়ে রাখি যে, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ কন্টেনার সুয়েজ খাল দিয়ে যায়। ২০২১ সালে, একটি জাহাজের ব্রেক ডাউনের ফলে সেখানে পুরো অপারেশন বন্ধ হয়ে যায় এবং এখন এটি বিঘ্নিত হচ্ছে হুথি হামলার কারণে। এমন পরিস্থিতিতে, গ্লোবাল ট্রেডের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প হিসেবে কাজ করবে IMEEC।