রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বিপর্যস্ত নেপাল, আঁচ লাগল ভারতেও, দূতাবাসের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: নেপালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আঁচ এসে লাগল ভারতেও (India)। নেপালে (Nepal) রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও টানা বিক্ষোভের পর অবশেষে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (KP Sharma Oli)। তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে ‘জেন জি’ আন্দোলন কার্যত গণবিপ্লবের চেহারা নিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসা ছাত্র-যুবদের দাপটে অচল হয়ে পড়ে গোটা দেশ। অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষমেশ দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল জানিয়েছেন, আপাতত দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তাদের উপরেই থাকবে। এর সঙ্গে তিনি রাজতন্ত্র ফেরার আভাসও দেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আন্দোলনের প্রথম দিনেই হাজার হাজার তরুণ পুরনো রাজতান্ত্রিক পতাকা হাতে স্লোগান তুলেছিলেন—“রাজা আউনপার্চা”, অর্থাৎ রাজা ফিরে আসবেই।

নেপালের আঁচ ভারতেও (India)

এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির আঁচ পৌঁছেছে ভারতেও (India)। কাঠমান্ডু বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় অন্তত ৪০০ ভারতীয় নাগরিক নেপালে আটকে পড়েছেন। তাঁদের খোঁজ নিতে দিল্লির মাণ্ডি হাউসে নেপাল দূতাবাসের সামনে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন পরিজনেরা। আতঙ্কিত পরিবারগুলির চাপ বাড়তে থাকায় সোমবার রাত থেকেই দূতাবাস ঘিরে ফেলে দিল্লি পুলিশ। দূতাবাস সংলগ্ন রাস্তায় ব্যারিকেড বসানো হয়, মোতায়েন করা হয় কয়েকশো পুলিশকর্মী। বুধবার থেকে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে, দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দূতাবাস এবং আশপাশের এলাকা সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে।

আরও পড়ুন:- অশান্ত নেপালে এবার অন্তর্বর্তী সরকার! প্রধান হতে চলেছেন সুশীলা কার্কি, অবাক করবে তাঁর পরিচয়

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের পর নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব বেছে নিয়েছে বিক্ষুব্ধ তরুণ প্রজন্ম। ‘জেন জি’-র ৫ হাজার প্রতিনিধি ভার্চুয়াল বৈঠকে ভোটাভুটি করে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকির নাম প্রস্তাব করেছেন। নেপালের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি ছিলেন কারকি। এবার তিনিই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে উঠে এসেছেন আন্দোলনকারীদের পছন্দের তালিকায়। প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহর নাম শোনা গিয়েছিল, তবে আন্দোলনকারীদের ফোনে সাড়া না দেওয়ায় শেষমেশ সর্বাধিক সমর্থন মেলে সুশীলা কারকির পক্ষে। (India)

India heightened security at Nepal embassy

আরও পড়ুন:- ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে পাকিস্তানের দিকে বন্ধুত্বের হাত আমেরিকার! সম্পন্ন হল ১৪,০০০ কোটির ডিল

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে সুশীলা কারকিকে সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেলের অনুমোদন মিললেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিতে পারবেন তিনি। বর্তমানে নেপালের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, তবে প্রতিবেশী দেশগুলোর কূটনৈতিক মহলে আশাবাদ—অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে অন্তত স্থিতিশীলতার পথে হাঁটতে পারবে কাঠমান্ডু। (India)