বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের (Pakistan) সাথে কিন্তু বরাবরই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে চীন (China)। তবে এই চীনের সাথে বিরাট রাজনৈতিক ব্যবধান রয়েছে তারই পড়শি দেশ তাইওয়ানের (Taiwan)। তাই এবার শত্রুর শত্রুকে বন্ধু বানানোর পুরনো প্রবাদকে হাতিয়ার বানাতে চলেছে ভারত (India)।
তাই অতীতে দেখা গিয়েছে চীনকে চাপে রাখতেই আমেরিকা বরাবরই তাইওয়ানের স্বশাসনকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে এখনও স্বশাসিত রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি ওয়াশিংটন। তাইওয়ানকে বরাবরই চিনের অংশ বলেই মনে করে বেজিং। শি জিনপিং সরকারের আমলেও অব্যাহত সেই নীতি।যদিও সেই দাবি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে তাইওয়ান।
কিন্তু তাইওয়ান দখল করতেই ক্রমশ আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করে চলেছে বেজিং। শুধু তাই নয় চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও নাকি প্রভাব খানাৰ চেষ্টা করেছিল শি জিনপিংয়ের দেশ। এমনকি তাইওয়ানের মানুষকে নাকি ভোট দিতেও নিষেধ করেছিল বেজিং। কিন্তু চীনের ভ্রূকুটির তোয়াক্কা না করেই ভোট দিয়েছিল তাইওয়ান। আর তারপর তাইওয়ানে আবার ক্ষমতায় আসেন চিন-বিরোধী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)-র নেতা লাই চিং তে।
যদিও এতদিন চিন-তাইওয়ান-এর মধ্যে কারও পক্ষই নেয়নি ভারত। এমনকি ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের পরেও ‘এক এবং অখণ্ড চিন’ নীতিকে সমর্থন করে এসেছে ভারত। তবে চিন যবে থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে বাণিজ্যপথ (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ) তৈরির উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে তবে থেকেই তাইওয়ানের সঙ্গে বন্ধুত্ব বেড়েছে ভারতের।আর তাই এবার বেজিং-তাইপেই দুই পক্ষের এই সম্পর্ককে হাতিয়ার করেই নিজেদের বৈদেশিক নীতির কাজে লাগাচ্ছে ভারত।
আরও পড়ুন: লন্ডনে নিলামে উঠবে ১০৬ বছরের পুরনো ১০ টাকার ভারতীয় নোট! দাম জানেন কত?
মূলত এই কারণেই সম্প্রতি ভারতের ‘ইন্ডিয়া-তাইপেই অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘তাইপেই ইকোনমিক অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার’-এর মধ্যে মউ (সমঝোতাপত্র) স্বাক্ষরিত হয়েছে। যা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাইওয়ানের শ্রমিক সমস্যা মেটাতে এবার ভারতের যোগ্য আবেদনকারীরা তাইওয়ানে কাজের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। এমনকি জানানো হয়েছে যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারলে ওই কর্মীদের স্থায়ী করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেবে তাইওয়ান সরকার।
সূত্রের খবর বর্তমানে প্রায় ৫০০০ ভারতীয় তাইওয়ানের বিভিন্ন সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত। তা ছাড়াও রয়েছেন আরও অন্যান্য পদে কর্মরত রয়েছেন আরও কয়েক হাজার ভারতীয়।তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে নয়াদিল্লি তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না-দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরী হয়নি। এই মুহূর্তে নয়াদিল্লি বা তাইপেইতে কোনও দূতাবাসও নেই। তবে এই মুহূর্তে ‘ইন্ডিয়া-তাইপেই অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘তাইপেই ইকোনমিক অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার’-ই দুই জায়গার দূতাবাসের ভূমিকা পালন করে।