বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারত (India)-রাশিয়া ও মোদি-পুতিন সম্পর্ক আরও গভীরতা পেল দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে। শুক্রবার হায়দরাবাদ হাউসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে সম্বোধন করেন ‘বন্ধু পুতিন’ বলে। এই সম্বোধন শুধু সৌজন্য নয়, দু’দেশের কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা কীভাবে বদলেছে তা স্পষ্ট করে দিল মোদীর ভাষণে। বৈঠকের আগেই সরকারি আধিকারিকরা জানান, ২০৩০ সাল পর্যন্ত ভারত-রাশিয়া অর্থনৈতিক সমন্বয় বৃদ্ধির বিষয়ে দুই দেশ মৌলিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। মোদীর কথায়, পুতিনের নেতৃত্বে এই বন্ধুত্ব এবং কৌশলগত সহযোগিতা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
বন্ধু পুতিনকে পাশে নিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার মোদির (India):
সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত-রাশিয়ার অভিন্ন অবস্থানও স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, পহেলগাম থেকে ক্রোকাস সিটি হল—সন্ত্রাসের উৎস একটাই। এটি মানবতার মূল্যবোধকে গভীরভাবে আঘাত করে, তাই এর বিরুদ্ধে লড়াই আরও তীব্র হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্য সরাসরি পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে দেওয়া কূটনৈতিক বার্তা। সাম্প্রতিক সময়ে বারবার পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতবিরোধী সুরে কথা বলতে দেখা গিয়েছে, বিশেষত ট্রাম্পকে পাশপাশে রেখে। মোদীর এদিনের মন্তব্য সেই সমস্ত পরোক্ষ হুঙ্কারের পালটা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সচিন-পুত্রের সঙ্গে টক্কর! বৈভব সূর্যবংশী নাকি অর্জুন তেন্ডুলকার, IPL-এ কে পাচ্ছেন বেশি বেতন?
বৈঠকের সময় যখন মোদী-পুতিন কূটনৈতিক আলোচনায় ব্যস্ত, ঠিক তখনই ইউক্রেনে চলছে মস্কো প্রস্তাবিত এক নতুন ‘শান্তি-চুক্তি’ আরোপের চেষ্টা। এই শান্তি উদ্যোগে আমেরিকার অবস্থান জানতে চেয়েছে রাশিয়া, যা পশ্চিমা দুনিয়ায় নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইউক্রেন সংঘাত সমাধান নিয়েই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাংবাদিক বৈঠকেও উঠে আসে এই শান্তি এবং স্থিতিশীলতার বিষয়টি।
মোদি স্পষ্ট করেন, ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর থেকেই ভারতের অবস্থান অপরিবর্তিত। তাঁর কথায়, শান্তিই একমাত্র পথ, এবং যে কোনও আলোচনায় ভারত দুই পক্ষের পাশেই দাঁড়াতে প্রস্তুত। যুদ্ধ নয়, আলোচনার পথেই সমাধান সম্ভব—এই বার্তা ভারত বহুবার দিয়েছে এবং পুতিনের ভারত সফরের দিনেই আবার তা জোর দিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন:২০১৪ সালের TET সার্টিফিকেট পেতে এখনই আবেদন করুন অনলাইনে, সহজ ধাপগুলো জানুন
এই বৈঠক শুধু কূটনৈতিক সৌজন্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, প্রযুক্তি, জ্বালানি—সব ক্ষেত্রেই আগামীর রূপরেখা স্থির করেছে দুই দেশ। পশ্চিমা চাপের মধ্যেও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখার বার্তা দিল ভারত। আর মোদির সম্বোধন ‘বন্ধু পুতিন’ যেন দুই রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে তোলারই ইঙ্গিত দিল।












