বাংলাহান্ট ডেস্ক : স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের (India-Pakistan) মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল তা আজও বিদ্যমান। যত সময় গেছে ততই উত্তাপ বেড়েছে ইসলামাবাদ ও দিল্লির সম্পর্কে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’ দুই দেশের সামরিক শক্তির যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে বিশ্লেষকরা বলছেন, ফৌজি ক্ষমতার দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ভারত।
ভারত ও পাকিস্তানের (India-Pakistan) সামরিক শক্তি
পরমাণু বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধজাহাজ, পাকিস্তানের থেকে ভারতের শক্তি ঠিক কতটা বেশি তারই হিসাব দেখে নেব আজকের প্রতিবেদনে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’ যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে সৈন্যশক্তির নিরিখে ভারতের অবস্থান চতুর্থ স্থানে। এই তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে ১২ তম স্থানে। শূন্যকে সূচক ধরে পয়েন্টের সাপেক্ষে প্রস্তুত করা এই তালিকায় ভারত (India) পেয়েছে ০.১১৮৪ পয়েন্ট।
আরোও পড়ুন : ‘আমি কিছু শুনব না’! ভরা এজলাসেই জানিয়ে দিলেন বিচারপতি! কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল হাইকোর্ট
অন্যদিকে, পাকিস্তানের (Pakistan) প্রাপ্ত পয়েন্ট ০.২৫১৩। প্রত্যেকটি দেশের ৬০টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়কে পর্যবেক্ষণ করে পয়েন্ট দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সামরিক বাজেট, একটি দেশের কাছে থাকা অস্ত্র ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই তালিকা প্রস্তুতিতে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-এর রিপোর্ট বলছে, ভারত সরকার ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ৭,৫০০ কোটি ডলার।
এই সময়কালে পাকিস্তান সরকারের খরচের পরিমাণ ছিল ৭৬৪ কোটি ডলার। ভারত বিদেশি মুদ্রার নিরিখে গোটা বিশ্বে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে। অপরদিকে, এই তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থান ৭১ তম স্থানে। যুদ্ধের হাতিয়ার ও গোলা-বারুদ কেনার নিরিখে ভারতের স্থান যেখানে ৩ নম্বরে, সেখানে পাকিস্তান রয়েছে এই তালিকার ২৫ তম স্থানে। বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলসেনা রয়েছে ভারতের কাছে।
আরোও পড়ুন : শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তির ভাগ পেতে পারে জামাই? কি বলছে দেশের আইন?
ভারতের স্থলসেনায় অ্যাকটিভ ও রিজার্ভ সৈনিকের সংখ্যা যথাক্রমে ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৫০ এবং ১১ লক্ষ ৫৫ হাজার। অপরদিকে, পাকিস্তানের অ্যাক্টিভ সৈনিকের সংখ্যা মাত্র ৬ লক্ষ ৫৪ হাজার। এই মুহূর্তে পাক ফৌজের কাছে রয়েছে সাড়ে পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি রিজার্ভ সেনা। ২৫.২৭ লক্ষের আধা সেনা বাহিনী নিয়ে ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। পাকিস্তান অন্যদিকে পাঁচ লক্ষ আধা সেনা নিয়ে অবস্থান করছে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে।
৪,২০১টি ট্যাঙ্ক এবং ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫৯৪টি সাঁজোয়া গাড়ি এই মুহূর্তে রয়েছে ভারতের স্থলবাহিনীর হাতে। পাশাপাশি ভারতের সেনাবাহিনী ৩,৯৭৫টি বিভিন্ন ধরনের কামান ব্যবহার করে থাকে। তবে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি এবং কামানের সংখ্যা যথাক্রমে ২ হাজার ৬২৭, ১৭ হাজার ৫১৬ ও ২ হাজার ৬২৯। রাশিয়ার সাথে যৌথ উদ্যোগে ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ভারত।
আরোও পড়ুন : ৭ ফেব্রুয়ারি নয়া নিয়ম! রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বড় আপডেট, জারি নির্দেশিকা
এমনকি ব্রহ্মস কেনার চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সাথে। পাশাপাশি ভারতের কাছে রয়েছে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রর বিশাল ভান্ডার। তবে পাকিস্তান এখনো ব্যবহার করে আসছে নির্দিষ্ট ব্যালেস্টিক শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র। তাই ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভারের দিক থেকে পাকিস্তানের থেকে বহুগুণ এগিয়ে ভারত। এমনকি বর্তমানে ভারত জায়গা করে নিয়েছে ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়েড’ভুক্ত দেশের তালিকায়।
স্থলসেনা থেকে নৌসেনা, আকাশ পথ থেকে নিউক্লিয়ার, সর্বক্ষেত্রেই পাকিস্তানের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ভারত (India-Pakistan)। তবে এতকিছুর পরেও পাকিস্তানের অহংকার কমার নয়। আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তান এখনও নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে জলের মতো অর্থ অপচয় করে যাচ্ছে শুধুমাত্র ভারতের সাথে পাল্লা দেওয়ার জন্য।