বাংলা হান্ট ডেস্ক: পহেলগাঁও-র সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ইতিমধ্যেই ভারত (India) পাকিস্তানের সাথে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছে। এদিকে, শনিবার ভারত পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদের হাত্তিন বালা এলাকায় ঝিলাম নদীতে জল ছেড়ে দেয়। এই কারণে, মুজাফফরাবাদ প্রশাসন ওয়াটার ইমার্জেন্সির ঘোষণা করেছে। মূলত, ঝিলাম নদীতে জল ছেড়ে দেওয়ার কারণে, মুজাফফরাবাদে হঠাৎ ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ঝিলাম নদীর জল ছেড়ে দিল ভারত (India):
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উরির অনন্তনাগ জেলা থেকে চাকোঠিতে জল প্রবেশের ফলে ঝিলাম নদীতে আকস্মিক ও তীব্র বন্যা দেখা দেয়। যার ফলে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়। জানিয়ে রাখি যে, সিন্ধু জল চুক্তির অধীনে পাকিস্তান যে ৩ টি নদীর জল ব্যবহার করত, বর্তমানে তার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার উপায়গুলি “স্টাডি” করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তির ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সৃষ্ট সিন্ধু জল বন্টন চুক্তির অধীনে, ভারতকে (India) পূর্বাঞ্চলীয় নদী অর্থাৎ শতদ্রু, বিয়াস এবং রবি-র জলের ক্ষেত্র একচেটিয়া অধিকার দেওয়া হয়েছিল। যেগুলির গড় বার্ষিক প্রবাহ প্রায় ৩৩ মিলিয়ন একর ফুট বা এমএএফ। এদিকে, পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী অর্থাৎ, সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাবের জল মূলত পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। যার গড় বার্ষিক প্রবাহ প্রায় ১৩৫ এমএএফ।
“এক ফোঁটা জলও পাকিস্তানে যাওয়া উচিত নয়”: এদিকে, ইতিমধ্যেই ভারতের (India) জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল গত শুক্রবার বলেছেন যে, সরকার একটি কৌশল নিয়ে কাজ করছে। যাতে এক ফোঁটা জলও পাকিস্তানে না যায়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক নির্দেশ জারি করেছেন এবং সেগলি বাস্তবায়নের জন্যই ওই সভার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বড়সড় দুর্নীতি রাজ্যে! ১,০০০ কোটির জমি কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস করল ED
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সরকার তার সিদ্ধান্তগুলির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। একজন আধিকারিকের মতে, মন্ত্রক ৩ টি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীর জল ব্যবহারের উপায়গুলি খতিয়ে দেখছে। বিশেষজ্ঞরা পরিকাঠামোগত অভাবের কথা বলেছেন। যা চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের (India) প্রাপ্ত জলের সম্পূর্ণ ব্যবহার সীমিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: পহেলগাঁও-তে জঙ্গি হামলার পর বড় পদক্ষেপ নিরাপত্তা বাহিনীর! আটক ১৭৫ জন সন্দেহভাজন
“প্রাকৃতিক কারণেই পাকিস্তানের দিকে জল প্রবাহিত হতে থাকবে”: এদিকে, সংবাদ সংস্থা PTI-এর এক রিপোর্ট অনুসারে, সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অন ড্যামস রিভারস অ্যান্ড পিপল (SANDRP)- তরফে হিমাংশু ঠক্কর বলেছেন যে, “আসল সমস্যাটি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলির সাথে সম্পর্কিত। যেখানে পরিকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা আমাদের অবিলম্বে জল প্রবাহ বন্ধ করতে বাধা দেয়। চেনাব উপত্যকায় আমাদের অনেক প্রকল্প চলছে, যেগুলি শেষ হতে ৫ থেকে ৭ বছর সময় লাগবে। ততক্ষণ পর্যন্ত প্রাকৃতিক কারণে জল পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত হতে থাকবে। একবার ওই প্রকল্পগুলি কার্যকর হয়ে গেলে, ভারতে একটি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে। যা বর্তমানে ভারতের কাছে নেই।”
এদিকে, পরিবেশকর্মী এবং মন্থন স্টাডি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীপাদ ধর্মাধিকারী বলেন যে, “ভারত (India) দ্রুত জলের প্রবাহকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে। বর্তমানে, পাকিস্তানে জলের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।”
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: