বাংলা হান্ট ডেস্ক : মৌলবাদি প্রচারক জাকির নায়েককে (Zakir Naik) ওমান (Oman) থেকে ভারতে (India) ফেরত আনার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি (New Delhi)। এমনটাই জানা গেছে, ভারতীয় ইন্টালিজেন্স এজেন্সি সূত্রে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে ওমানের প্রশাসনের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জাকির নায়েককে ওমানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
জানা গেছে, ওমানের ওয়াকফ ও ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাকির নায়েককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ সেখানে প্রথমে ভাষণ দেবেন। কোরান কেন গোটা বিশ্বে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সেই প্রসঙ্গেই বক্তব্য রাখবেন তিনি। পরবর্তী ভাষণ দেবেন ওমানের সুলতান কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বক্তব্যের বিষয়, মানবসমাজের দয়ালু ব্যক্তিত্ব হজরত মুহাম্মদ। এই ভাষণটি হবে আগামী ২৫ মার্চ। তবে জাকির নায়েকের মুম্বাইয়ের আইনজীবী মুবিন সোলকার, এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছেন।
২০১৬ সালের শেষের দিকে জাকির নায়েকের সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। হিংসা ছড়ানো, বন্দি করে রাখা ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার ছড়ানোর মতো অভিযোগ আনা হয়েছিল জাকির নায়েক ও তার সংগঠনের বিরুদ্ধে। পরে ভারত ছেড়ে জাকির নায়েক ঠাঁই নেন মালয়শিয়াতে। একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, এরপর মালয়শিয়াতেও দেশের আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তবে ততদিনে সে দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলেন এই ধর্মীয় প্রচারক।
২০২২ সালের মার্চ মাসে সন্ত্রাসবাদীদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ভাষণ দিতে শোনা যায় জাকির নায়েককে। তারপর থেকে নায়েকের সংগঠন ইন্ডিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সমস্ত কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়। থেরেসা মে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ওসামা বিন লাদেনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করার অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি জাকির নায়েক বলেছিলেন, “সব মুসলিমেরই জঙ্গি হওয়া উচিত।”
ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জাকির নায়েক সম্পর্কে যে নোটিস জারি করেছিল তাতে উল্লেখ করা ছিল একাধিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদতের কথা। যুবদের মুসলিম ধর্মে দীক্ষিত করে তোলা, আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য করা সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে জাকিরের বিরুদ্ধে। হিন্দু দেব দেবী এবং ধর্মের বিরুদ্ধে একাধিকবার বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। নানাভাবে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতে উসকানি দেওয়া হচ্ছিল জাকির এবং তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে। এমনটাও জানিয়েছিল ভারত সরকার।