বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাড়ি দিয়েছিলেন অন্য দেশের উদ্দেশ্যে, কিন্তু প্লেন এসে অবতরণ করল এক মুসলিম দেশে। আর সেই দেশে পা ফেলতেই রীতিমত হেনস্তার শিকার হতে হলো ভারতীয়দের (Indian)। আসলে মুম্বাই থেকে ম্যানচেস্টারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল একটি বিমান। কিন্তু সমস্যা তৈরি হওয়ায় ওই বিমানটিকে কুয়েতের বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করা হয়। আর এখানে নেমেই চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় ভারতীয় যাত্রীদের। ১৩ ঘন্টা জল খাবার না পেয়েই বিমানবন্দরে আটকে থাকেন তারা।
কুয়েতে পোঁছে দুর্ভোগের শিকার ভারতীয় (Indian) যাত্রীরা:
আসলে রবিবার মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ম্যাঞ্চেস্টারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল গাল্ফ এয়ারলাইন্সের বিমানটি। বিমানে থাকা যাত্রীদের প্রায় অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয় (Indian)। আর বেশ কিছু ছিলেন আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ অন্য কিছু দেশের যাত্রী। জানা যায়, যাত্রাপথে ওই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। বিমানের ইঞ্জিন থেকে হঠাৎই আগুনের ফুলকি বেরোতে শুরু করে। ফলে তড়িঘড়ি কুয়েতে বিমান অবতরণ করা হয়। আর এখানে আসতেই বিপদে পড়েন বিমানে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা।
আসলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করতে হয় সমস্ত যাত্রীদের। কিন্তু ভারতীয় যাত্রীরা (Indian Passengers) অভিযোগ তোলেন, সেখানে তাঁরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তাদের অভিযোগ বিমানে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, আমেরিকার যাত্রীদেরই থাকার ব্যবস্থা করেছে এয়ারলাইন্স। কিন্তু ভারতীয়, পাকিস্তানি ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যাত্রীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। উল্টে লাউঞ্জে প্রবেশ করতে গেলে তাদের চরম হেনস্থার মুখে পড়তে হয়।
Embassy @indembkwt had immediately taken up the matter with Gulf Air in Kuwait. A team from Embassy is at the airport to assist the passengers and coordinate with the airline. Passengers have been accommodated in 2 airport lounges. pic.twitter.com/1OySe3KGLc
— India in Kuwait (@indembkwt) December 1, 2024
ভারতীয়রা পরিষেবা পাওয়ার যোগ্য নয়: বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এদিন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে জানান, আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ভারতীয় (Indian), পাকিস্তানিরা এই ধরনের পরিষেবা পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ এই সুবিধা একমাত্র যাদের ট্রানজিট ভিসা রয়েছে তারাই পাবে। কিন্তু ভারতীয় নাগরিকরা সহজে এই ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার সুযোগ পান না। এরফলে ভারতীয় নাগরিকদের এমন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। বিমান কর্তৃপক্ষের কথা শুনে ক্ষোভে পড়ে যাত্রীরা। অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর অবশেষে দু’ঘণ্টা পর লাউঞ্জে ঢোকার অনুমতি পান।
লাউঞ্জে প্রবেশের পর আরো অপমানিত হতে হয়: লাউঞ্জে প্রবেশের পরও শান্তি নেই। সেখানে তাদের সামান্য পানীয় জলের ব্যবস্থাটুকুও দেওয়া হয়নি। এমনকি শিশু এবং বয়স্কদের জন্য খাবার ও কম্বল চাইলে তাও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। একপ্রকার চরম অসহায তার মুখে পড়তে হয়েছে সেদিন ভারতীয় যাত্রীদের (Indian Passengers)। সম্প্রতি সমাজের মাধ্যমে এই বিষয় বিভিন্ন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তারাও হয়তো ওই বিমানেরই যাত্রী ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন সূচনা! পুতিনকে আমন্ত্রণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, হবে ঐতিহাসিক আলোচনা
তৎপরতার সাথে বিষয়টিকে সামাল দেন কুয়েতে ভারতীয় দূতাবাস: ভারতীয় যাত্রীদের সমস্যার কথা কুয়েত ভারতীয় দূতাবাসের কানে উঠতেই তিনি তৎপর হয়ে ওঠেন। ওই বিমানবন্দরে পৌঁছান ভারতীয় দূতাবাসের কয়েকজন আধিকারিক। তারাই ভারতীয় যাত্রীদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা করে দেন। এমনকি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়, আটকে পড়া ভারতীয় (Indian) সকল যাত্রীদের সাহায্যের জন্য একটি টিম পাঠানো হয়েছে। তারা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে এবং এই পরিস্থিতিতে আটকে থাকা যাত্রীদের দুটি লাউঞ্জে থাকার ব্যবস্থা করা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফের বাড়বে শক্তি! ভারতের নৌসেনায় জুড়বে আরও ২৬টি রাফাল, এই দেশের সাথে চূড়ান্ত হতে চলেছে চুক্তি
একেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে। তার মাঝে এমন ঘটনা যেন ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভের মাত্রা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল। প্রশ্ন আর কতদিন এভাবে চলবে? কেনো বারবার এই বৈষম্যের শিকার হতে হবে ভারতীয়দের? সমাজ উন্নত হলেও মানসিকতা হয়তো কোথাও গিয়ে এখনো সেকেলের থেকে গেছে। তাইতো এত বর্ণবৈষম্যতা।