হুঁশিয়ারির পরেও ফের কোরআন পোড়ানোর অনুমতি সুইডেনে! ফের চটল ইসলামিক দুনিয়া, হামলা দূতাবাসেও

বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত মাসে বকরী ঈদের দিন ইউরোপের সুইডেন (Sweden) এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকে। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সেখানের সবচেয়ে বড় মসজিদের বাইরেই পোড়ানো হয় কোরান (Quran)। সারাবিশ্বেই সেইনিয়ে শুরু হয় বিরাট বিতর্ক। ইরাকি শরণার্থী ‘সালমান মোমিকা’ (Salman Momika) পুড়িয়ে ফেলেন কোরান। ইন্টারনেটে লাইভ করে দেখানোও হয় সেই দৃশ্য। সম্প্রতি খবর এসেছে যে, সুইডেন সরকার আরো একবার তাকে কোরান পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে।

সম্প্রতি ফ্রান্স সহ গোটা ইউরোপে দাঙ্গার পর থেকেই সারাবিশ্বে ইসলামকে নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সুইডেনে প্রথমবার কোরান পোড়ানোর সময় যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়, দ্বিতীয়বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেখে  মুসলিম বিশ্ব যেন জ্বলে ওঠেছে। ইরাকি শরণার্থীর পুনঃ কোরান পোড়ানোর প্রস্তুতি নিতেই ইরাকের রাজধানী বাগদাদে (Baghdad) শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। এমনকি সুইডেনের দূতাবাসে হামলাও শুরু করে দেয় ক্ষুব্ধজনতা (Islamic Mob)।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ ইরাকি জনতা জমায়েত করে সুইডেন দূতাবাসের সামনে। এরপর দলবদ্ধভাবে সুইডিশ দূতাবাসে হামলা চালায় (Islamic Mob attack swedish consulate)। এমনকি দূতাবাসের কম্পাউন্ডে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া বেশকিছু ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে, বিক্ষোভকারীরা ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা ‘মুকতাদা আল-সদর’ এর ছবি সম্বলিত পতাকা ও চিহ্ন নিয়ে হামলা করেছে। দূতাবাসে ভাংচুরের পর কম্পাউন্ডে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।

ক্ষুব্ধ ইসলামি জনতা হামলা করলেও দূতাবাসের কর্মীদের অবশ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সবাই নিরাপদে আছে বলেই জানিয়েছে সুইডিশ সরকার। সাথে কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে তলব করলে ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুইডিশ দূতাবাসে হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে বলেও উল্লেখ করে ইরাক সরকার। সুইডেনকে ইরাকের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইননানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুইডেনে দ্বিতীয় বারের জন্য কোরান পুড়িয়ে ফেলার অনুমতি দেওয়ার সাথে সাথেই ইরাকি নেতা আল-সদর তার টেলিগ্রাম গ্রুপে এই নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে মাঠে নামার আহ্বান জানায়। এদিকে সুইডিশ সরকার সালমান মোমিকাকে পুনরায় কোরান পোড়ানোর সাথে সাথে ইরাকের পতাকা পোড়ানোর অনুমতিও দেয়। এমনকি স্টকহোমের ইরাকি দূতাবাসের বাইরেও বিক্ষোভের অনুমতি দিয়েছে তারা। আগেরবারের মতো এবারও পুলিশি সুরক্ষা থাকবে বলেই জানা যাচ্ছে।

কোরান পোড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিভিন্ন ইসলামিক রাষ্ট্রও। সকলেই প্রতিবাদ করতে থাকে ঘটনাটি নিয়ে। সুইডেনের কূটনীতিকদের ডেকে প্রতিবাদও জানায় মুসলিম দেশগুলো। OIC বা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন নিজেদের জরুরি মিটিং ডেকেছে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর লক্ষ্যে। এখন দেখার, সুইডেন ইসলামি বিশ্বের চাপের সামনে মাথানত করে, নাকি নিজের দেশের বাক-স্বাধীনতা বজায় রেখে কোরান পোড়ানোর অনুমতি দেয়!

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর