গগনযান মিশনের জন্য তৈরি নয়া হাতিয়ার, ফের চমকে দিল ISRO

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO (Indian Space Research Organisation) বর্তমানে গগনযান মিশনের (Gaganyaan Mission) জন্য কাজ করছে। চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) এবং আদিত্য L-1 (Aditya L-1)-এর সাফল্যের পর এই মিশন ISRO-কে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে। গগনযান হবে ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী মিশন। ইতিমধ্যেই ISRO গগনযান মিশনের জন্য “CE-20 ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন” প্রস্তুত করেছে। পাশাপাশি, এই ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। গগনযান মনুষ্যবাহী মহাকাশ অভিযানের জন্য এলভিএম লঞ্চিং প্যাডের “ক্রায়োজেনিক পর্যায়” শক্তি প্রদান করে। ISRO জানিয়েছে যে, CE-20 ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন মানব মিশনের জন্য চূড়ান্ত পরীক্ষায় সফল হয়েছে।

এদিকে, ইঞ্জিনের টেস্টিংয়ের মাধ্যমে সেটির ক্ষমতা সম্পর্কেও জানা গিয়েছে। ISRO-র মতে, প্রথম মানব বিহীন “LVM3 G1”-এর জন্য চিহ্নিত CE-20 ইঞ্জিন সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এখন মিশনের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য ISRO প্রস্তুত। এর আগে লঞ্চ প্যাডের ৪ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কেউ ছিল না। এমনকি লঞ্চ প্যাডে নিরাপত্তা প্রদানকারী CISF কর্মীরা টেক অফের ২ ঘণ্টা আগে তাঁদের পোস্ট ছেড়ে দিতেন। কিন্তু, ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো ভারতীয় মহাকাশচারীরা স্পেসসুট পরা একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লঞ্চ প্যাডে পৌঁছবেন। পাশাপাশি, ISRO ১৯ বছরের পুরনো লঞ্চ প্যাডকেও আপগ্রেড করছে।

ISRO has developed a new platform for the Gaganyaan mission.

মহাকাশচারীরা ৮ ঘন্টা থেকে ১ দিন পর্যন্ত মহাকাশে থাকবেন: এই প্রসঙ্গে সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার (SDSC) এর পরিচালক এ. রাজারাজন জানিয়েছেন “আলাদা লঞ্চ প্যাড তৈরি করতে সময় লাগে। তাই দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাডে উন্নতির কাজ চলছে। প্রতিবার আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। আমরা কিছু নতুন পরিবর্তনও করি।” তিনি জানান যে, এটি প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ। যে রকেট মহাকাশচারীদের পাঠাবে, তাতে আরও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হবে। এই মিশন ৮ ঘন্টা থেকে ১ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: উভয়সঙ্কটে শরীফ! পাকিস্তানে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব চিনের, রাজি না হলেই অ্যাকশন নিতে প্রস্তুত বেজিং

এদিকে, মিশন চলাকালীন মহাকাশচারীরা পুরো সময় ক্রু মডিউলে থাকবেন। যেখানে তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় থাকবে। সেন্টারের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, মিশনের সময়ে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে। যেমন সেই সময়ে জ্বালানি লিক হতে পারে, সেই পরিস্থিতিতে রকেটে বিস্ফোরণ পর্যন্ত হতে পারে। তাঁরা জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে গগনযান মিশন চালু হবে। তবে, এর প্রাথমিক পর্যায়গুলি এই বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে মহাকাশে দু’টি মনুষ্যবিহীন মিশন পাঠানো। এই অভিযানগুলি সফল হলেই মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন: “সারাজীবন সবাই ভুলভাবে ডেকেছে”, অতিষ্ঠ হয়ে IPL-এর মাঝেই নিজের নাম বদলালেন তারকা ক্রিকেটার

গগনযান মিশন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গগনযান মিশন ISRO দ্বারা তৈরি ভারতের মানব স্পেসফ্লাইট প্রোগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মিশনে ৩ টি মহাকাশ অভিযান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ৩ টি মিশনের মধ্যে ২ টি হবে মনুষ্যবিহীন, আর ১টি হবে মনুষ্যবাহী মিশন। গগনযান মিশন ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ অভিযান হিসেবেও বিবেচিত হবে। এই মিশনের মাধ্যমে ৩ জন মহাকাশচারীকে ৩ দিনের জন্য ৪০০ কিলোমিটারের কক্ষপথে লঞ্চ করা এবং তাঁদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ISRO গত বছর এই মিশনের পরীক্ষা করেছিল। পাশাপাশি, সম্প্রতি ISRO ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের পরীক্ষাও করেছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর